পুলিশ জানায়, সোমবার সকালে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মহিদুল শেখ (২৮) নামের এক যুবককে পৌর শহরের কবরস্থান রোড এলাকায় মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে বেধড়ক মারপিট করে মাহমুদ ও বনি শেখ নামের দুই যুবক। এতে মহিদুলের মাথায় মারাত্মক জখম হয়। এ সময় তার সাথে থাকা তার স্ত্রীও হামলার শিকার হন। হামলাকারীরা কাঠের বাটাম দিয়ে মহিদুলের মাথায় আঘাত করে। এ আঘাতে মহিদুল ঘটনাস্থলে অচেতন হয়ে লুটিয়ে পড়ে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় গুরুতর আহতাবস্থায় মহিদুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতে মৃত্যু হয় তার। এদিকে সোমবার মহিদুলের উপর হামলার ঘটনায় স্থানীয় লোকজন হামলাকারী মাহমুদ ও বনিকে ধরে পুলিশে দেয়। ওইদিন মারামারি ঘটনার মামলায় তাদেরকে বাগেরহাট জেলহাজতে পাঠানো হয়।
নিহত মহিদুল মিঠাখালী ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামের হান্নান শেখের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায় গত সপ্তাহে পৌর শহরের মাদ্রাসা রোডে গাড়ি (মোটরসাইকেল ও অটোভ্যান) ওভারটেক করা নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে মহিদুল ও মাহমুদ-বনি। সেই বিরোধের জের ধরে সোমবার মাহমুদ ও বনি হামলায় চালায় মহিদুলের উপর। আর এতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতে মৃত্যু হয় তার।
ঘাতক মাহমুদ ও বনি মোংলা সুন্দরবন ইউনিয়নের কচুবুনিয়ার বাসিন্দা। তারা পেশায় একজন অটোভ্যান চালক অন্যজন গারমেন্টস শ্রমিক। এঘটনায় স্থানীয় জনতা ঘাতক মাহমুদ ও বনিকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের সোপর্দ করে।
নিহত মহিদুল উপজেলা শ্রমিকদলের সদস্য বলে জানা গেছে। তার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন উপজেলা শ্রমিক দলের সদস্য সচিব মনির হোসেন।
নিহত মহিদুলের বড়ো ভাই বুলবুল জানান, আমার ছোট ভাই তার স্ত্রীকে গারমেন্টসে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সকাল বেলা বাসা থেকে বের হয়। আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর সামনে ওরা আমার ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। শুনেছি গাড়ি ওভারটেক করা নিয়ে এক সপ্তাহ আগে তাদের ভিতর কথা কাটাকাটি হয়, আমার ভাইয়ের দুটি ছোট ছোট সন্তান রয়েছে আমি এই ঘাতকদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। এভাবে যেন আর কোন মায়ের বুক খালি না হয়। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওরা আমার ভাইকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
মহিদুল নিহত-এর ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। আইনানুগ সকল প্রক্রিয়া শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মহিদুলের লাশ দাফন করা হবে বলে জানা যায়।
মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান বলেন, মহিদুল শেখের মৃত্যুর ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়। তাদেরকে প্রাথমিকভাবে মারামারি মামলায় বাগেরহাট আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আর এখন নতুন করে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।