মোংলা পৌর বিএনপির কাউন্সিল ঘিরে পুরো এলাকা রূপ নিয়েছে উৎসবের নগরীতে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চলছে প্রার্থীদের প্রচার, শক্তিশালী লড়াইয়ে মাঠে জুলফিকারসহ একাধিক নেতা।
মোংলায় পৌর বিএনপির কাউন্সিল ঘিরে উত্তেজনার পারদ চরমে। শহরের প্রতিটি অলিগলি যেন নির্বাচনী আমেজে জমজমাট হয়ে উঠেছে। পোস্টার, লিফলেট, মাইকিং আর পদচারণায় মুখর পুরো পৌর এলাকা। বিশেষ করে, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীদের জোরালো প্রচারণায় উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
আসন্ন ২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলকে সামনে রেখে মূল প্রতিযোগিতা এখন মাঠের লড়াইয়ে। ভোট গ্রহণ চলবে ওইদিন দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত, যেখানে ৬৩৯ জন ভোটার তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন।
পৌর বিএনপির সভাপতি পদে দুইজন, সাধারণ সম্পাদক পদে চারজন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ১০ জন প্রার্থী এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত মুখ হলেন পৌর বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক এবং সাবেক পৌর মেয়র মো. জুলফিকার আলী। তিনি এক সময় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এখন সভাপতির জন্য লড়ছেন।
গত বুধবার বিকেলে, তিনি নিজের এলাকা ১ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচারণা চালান। সেখানে তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন শতশত দলীয় কর্মী ও সমর্থক। বক্তৃতায় তিনি বলেন, "এই কাউন্সিল আমাদের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের সম্মান দেওয়ার সুযোগ। আমি অতীতে কাজ করেছি মানুষের জন্য, ভবিষ্যতেও করতে চাই।"
জুলফিকারের প্রচারণা শুরুর পর শহরের রাজনীতি যেন নতুন গতি পেয়েছে। তার পোস্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও বাজার এলাকা। একাধিক যুবনেতা তার পক্ষে প্রচারণায় নেমেছেন, স্থানীয়ভাবে গণসংযোগ, মাইকিং, এবং উঠান বৈঠকেও অংশ নিচ্ছেন।
অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বীরাও বসে নেই। সভাপতি ও সম্পাদকীয় পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সমানভাবে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রচারণা চালাচ্ছেন। কেউ উঠান বৈঠকে জনগণের মন জয় করছেন, কেউ আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের কার্যক্রম তুলে ধরছেন।
এক প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, "আমরা গণতন্ত্র চর্চা করছি। প্রতিযোগিতা হচ্ছে, তবে তা সৌহার্দ্যপূর্ণ। কাউন্সিল হবে ইতিহাস সৃষ্টিকারী।"
স্থানীয় বিএনপি সূত্র জানায়, এবার নেতৃত্বে পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। কাউন্সিল ঘিরে দলীয় কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা ব্যাপকভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন, বর্তমান সংকটময় জাতীয় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই কাউন্সিল হতে পারে দলের পুনর্গঠনের মাইলফলক।
ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই জমে উঠছে প্রচার। কেউ বলছেন পরিবর্তনের প্রয়োজন, কেউ আবার অভিজ্ঞ নেতৃত্ব চান। শেষ পর্যন্ত কার ভাগ্যে জুটবে নেতৃত্বের মুকুট, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে ২৭ জুলাই পর্যন্ত।