রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার জেনেভা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শাহ আলম (২২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ অভিযানে মোট ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার বিকেলে, যখন 'বুনিয়া সোহেল' ও 'চুয়া সেলিম' নামে দুটি গ্রুপের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষের সময় শাহ আলমকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সংঘর্ষের পরপরই পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর একটি যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে দেশীয় অস্ত্র, হেলমেট এবং মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মতি জামিল (২৮), মো. ফয়সাল হোসেন (৩৭), মো. আজাদ হোসেন (২২), মো. গোলাম রসুল (৪৪), নাসির হোসেন নাচোস (৩০), মো. ফাইয়াজ হোসেন (৩৬), মো. রাসেল (২৭), মো. আল আমিন (২২), মো. হিরা (৩৫), মো. মোস্তাক (২৪), সাইদ হোসেন (২১), মো. শুভ (২৪), মো. রাকিব (২২)।
৪৬ স্বতন্ত্র ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজিম আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে চারজনের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। বাকিদের বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও জানান, সংঘর্ষের সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হয়েছে।
জেনেভা ক্যাম্পের দীর্ঘদিন ধরে চলমান মাদক ব্যবসা ও গ্যাং কালচারের ফলেই এমন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিজ্ঞ মহল মন্তব্য করেছেন। ক্যাম্পটি দীর্ঘদিন ধরেই অপরাধপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় লোকজনের দাবি, মাদক ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত অভিযান চালানো প্রয়োজন।
এই ঘটনা স্থানীয় সমাজে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে এবং অনেকেই নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এলাকাবাসী আশা করছেন, এ ধরনের অভিযানে মাদক ব্যবসা ও গ্যাং কালচার নিয়ন্ত্রণে আসবে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে শুধুমাত্র গ্রেপ্তার করলেই সমস্যার সমাধান হবে না; সমাজের গভীরে থাকা সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে।
এদিকে, আইন ও বিচার বিশ্লেষকরা বলছেন, মাদক ব্যবসা ও গ্যাং কালচার নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী আইন প্রয়োগ এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।