ম্যাচটি শেষ হওয়ার কথা ছিল দুই ঘণ্টার মধ্যেই, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বৈরী আবহাওয়ার কারণে তা পরিণত হয়েছে এক দীর্ঘ নাটকে।
ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় ব্যাংক অব আমেরিকা স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ সময় রাত ২টায় শুরু হয় খেলা। ৮৫ মিনিট পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই চলছিল ম্যাচ। তখন ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল ইংলিশ ক্লাব চেলসি। দলের হয়ে দুর্দান্ত এক ফ্রি কিকে গোল করেন রিস জেমস। কিন্তু এরপরই আচমকা বজ্রপাত ও প্রবল ঝড়ের কারণে বন্ধ হয়ে যায় খেলা। সেই বিরতি দীর্ঘ হয় প্রায় দুই ঘণ্টার মতো।
বিরতির পর যখন খেলা আবার শুরু হয়, তখন ঘড়ির কাঁটায় রাত প্রায় ৪টা পেরিয়ে গেছে। এরপরও ম্যাচ শেষ হতে সময় লাগে আরও দুই ঘণ্টার কাছাকাছি। সব মিলিয়ে ম্যাচ শেষ হয় ভোর ৬টা ৩৯ মিনিট নাগাদ।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর আবার খেলা শুরু হলে দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে নতুন নাটক দেখা দেয়। বেনফিকার আর্জেন্টাইন উইঙ্গার জানলুকা প্রেস্তিয়ানি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। ১০ জনের দল নিয়েও হাল ছাড়েনি বেনফিকা। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান অভিজ্ঞ তারকা আনহেল ডি মারিয়া। এরপর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
প্রথম ১৫ মিনিটে গোলের দেখা মেলেনি কোনো দলের পক্ষ থেকেই। তবে দ্বিতীয় ভাগে ম্যাচে দাপট দেখায় চেলসি। একে একে বেনফিকার জালে বল পাঠান ক্রিস্টোফার এনকুনকু, পেদ্রো নেতো ও কিয়েরনান ডসবেরি-হল। শেষ পর্যন্ত ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে চেলসি।
জয় পেয়ে মাঠ ছেড়েছে ঠিকই, তবে ম্যাচ শেষে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন চেলসি কোচ এনজো মারেসকা। এমন দীর্ঘ বিরতি, ম্যাচে বারবার বিঘ্ন এবং সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, “এটা কোনো ম্যাচ হতে পারে না, এটা একটা কৌতুক। আপনি খেলোয়াড়দের এত দীর্ঘ সময় মাঠের ভেতরে বসিয়ে রাখতে পারেন না। এটা স্বাভাবিক নয়।”
মারেসকা যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া ও ম্যাচ আয়োজন নিয়েও সমালোচনা করেছেন। তাঁর মতে, এভাবে এক প্রতিযোগিতায় বারবার খেলা বন্ধ হলে, সেই জায়গা বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য আদৌ উপযুক্ত কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। তিনি মনে করেন, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ কিংবা অন্য বড় প্রতিযোগিতায় এত ম্যাচ বন্ধ থাকে না। অথচ ক্লাব বিশ্বকাপে সাত-আটটি ম্যাচ আংশিক বা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
তাই চেলসির জয় এখন মুখ্য বিষয় নয়। আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের বৈরী আবহাওয়া এবং ২০২৬ বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে আশঙ্কা। এমন ম্যাচ ফুটবলের সৌন্দর্যকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।