রাজধানীর মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে বিএনপিকে দোষারোপ করা হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা আমিনুল হক।
রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপিকে দায়ী করার চেষ্টা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক। তিনি অভিযোগ করেন, একটি মহল পরিকল্পিতভাবে বিএনপির ওপর দোষ চাপিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।
শনিবার কাওলায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সেখানে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ‘বেগম খালেদা জিয়া ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, “মিটফোর্ডে ঘটে যাওয়া বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞকে কেন্দ্র করে কিছু দুষ্টচক্র বিএনপিকে জড়ানোর অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এই ঘটনার সঙ্গে যদি আমাদের দলের কেউ জড়িত থাকে, তাকেও অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি কখনোই সহিংসতা, সন্ত্রাস বা রাজনৈতিক দমন-পীড়নের পক্ষে নয়। বরং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, কোনো সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখল বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি জিরো টলারেন্স নীতি মেনে চলে।
তিনি জানান, যদি প্রমাণ হয়, কোনো নেতা-কর্মী অপরাধে জড়িত, তবে তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। আমাদের দলের ভাবমূর্তি ও আদর্শের সঙ্গে এ ধরনের অপকর্ম একেবারেই সাংঘর্ষিক।
ভোটাধিকার প্রসঙ্গে বক্তব্যে আমিনুল হক বলেন, গত ১৫ বছর ধরে দেশের মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। বিএনপি নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের পর মানুষ আশাবাদী হয়েছিল অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে। কিন্তু এখন আবার কিছু মহল সেই সম্ভাবনাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্রে নেমেছে।
তিনি জানান, তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের মধ্যকার আলোচনার পর আগামী ফেব্রুয়ারিতে অবাধ নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনায় দেশের মানুষ আশ্বস্ত হয়েছিল। অথচ এখন সেটিকেও ঘোলা জলে পরিণত করার চেষ্টা চলছে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা কেউ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন না। ঐক্যবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের আন্দোলনের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে—গণতান্ত্রিক সরকারের প্রতিষ্ঠা, যারা জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, এবং কেন্দ্রীয় ও মহানগর পর্যায়ের একাধিক নেতৃবৃন্দ। বক্তব্যে অংশ নেন মাহামুদুর রহমান সুমন, হাজী মো. মোস্তফা জামান, মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এবিএমএ রাজ্জাক, রুনা লায়লা, আলী আকবর, মনির হোসেন ভূইয়া, মহিউদ্দিন তারেক, মাসুদ আহমেদ খান, আবদুর রউফ, রানা হোসেন রুবেলসহ শতাধিক নেতাকর্মী।
তারা সকলেই মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন এবং বিএনপিকে জড়ানোর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ জানান।