স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর > দিনাজপুরের মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের খনিতে বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ মেট্রিক টন পাথর মজুদ রয়েছে, যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ৩ শত কোটি টাকা। পাথরগুলো মূলত ৪০-৬০ মিলিমিটার এবং বোল্ডার সাইজের, যা রেলপথ এবং নদী শাসন প্রকল্পে ব্যবহৃত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকারি নীতিগত সিদ্ধান্তের অভাবে এই পাথর বিক্রয় সম্ভব হচ্ছে না।
### পাথরের মজুদ ও বাজার পরিস্থিতি
মধ্যপাড়া খনিতে উত্তোলিত পাথরের মধ্যে ৫১ শতাংশ পাথরই ৪০-৬০ মিলিমিটার সাইজের। এই সাইজের পাথর রেলপথ সম্প্রসারণ কাজে ব্যবহৃত হওয়ার কথা ছিল। তবে ভারতীয় কোম্পানিকে রেলপথ সম্প্রসারণের চুক্তি দেওয়ায়, শর্তানুযায়ী ৭৫ শতাংশ পাথর ভারত থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশ রেলওয়ে মধ্যপাড়ার পাথর না কিনে ভারতীয় পাথর ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছে।
অপরদিকে, নদী শাসন প্রকল্পগুলিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড আগে মধ্যপাড়ার বোল্ডার পাথর ব্যবহার করতো, কিন্তু বর্তমানে তারা কম টেকসই বালু সিমেন্টের তৈরি বোল্ডার ব্যবহার করছে। এই পরিবর্তনও নীতিগত সিদ্ধান্তের অনুপস্থিতির ফল।
### বিশ্লেষণ ও প্রেক্ষাপট
মধ্যপাড়ার পাথরগুলো আগে সৈয়দপুর বিমানবন্দর, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পদ্মা সেতুর লিং প্রকল্পসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যবহৃত হয়েছে। তবে বর্তমানে মজুদ পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, খনিতে পাহাড় সমান পাথরের স্তুপ জমে গেছে।
মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের উপ মহাব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন যে, প্রতিদিন খনিতে ৫৫০০ মেট্রিক টন পাথর উত্তোলিত হয়। এই পাথর দেশের বাজারে বিভিন্ন দামে বিক্রি করা হয়।
### ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও প্রস্তাব
মধ্যপাড়া খনির পাথর ব্যবহারের জন্য রেলওয়ের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে ক্রিডেটে পাথর বিক্রির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচিত নদী শাসনে আরও বেশি পরিমাণে মধ্যপাড়ার টেকসই বোল্ডার পাথর ব্যবহার করা।
উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন প্রকল্পগুলিতে এই পাথরের বিজ্ঞানসম্মত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের দ্রুত বাস্তবায়ন অপরিহার্য। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।