ক্যাপ্রিও শুধু আদালতের বিচারকই ছিলেন না, ছিলেন কোটি মানুষের কাছে মানবিকতার প্রতীক। সহানুভূতি, রসবোধ ও হৃদয়গ্রাহী আন্তরিকতার জন্য বিশ্বজুড়ে তিনি পরিচিত ছিলেন। তাঁর মানবিক রায়গুলো সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে তাকে এনে দিয়েছিল “বিশ্বের সবচেয়ে দয়ালু বিচারক” এর খেতাব।
১৯৩৬ সালের ২৪ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের প্রভিডেন্সে জন্মগ্রহণ করেন ফ্রাঙ্ক ক্যাপ্রিও। তরুণ বয়সে শিক্ষকতা করতে করতেই তিনি আইন অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে সাফোক ইউনিভার্সিটি থেকে আইন ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৮৫ সালে তিনি প্রভিডেন্স মিউনিসিপাল কোর্টে বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। প্রায় চার দশক বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০২৩ সালে প্রধান বিচারকের পদ থেকে অবসর নেন।
Caught in Providence অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে তিনি অসংখ্য দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নেন। তাঁর আদালতের অনন্য রায়, যেখানে শাস্তির বদলে পাওয়া যেত মানবিক সমাধান, মিলিয়ন মানুষের মনে ছাপ ফেলেছিল।
তার জনপ্রিয়তা সামাজিক মাধ্যমেও ব্যাপক ছিল—ফেসবুকে ৩৪ লাখ, ইনস্টাগ্রামে ৩৩ লাখ এবং টিকটকে ১৬ লাখ অনুসারী ছিলেন তার। মৃত্যুর আগের দিনও তিনি হাসপাতাল থেকে ভক্তদের উদ্দেশে শেষবারের মতো পোস্ট করে লিখেছিলেন: “আমাকে শেষবারের মতো প্রার্থনায় মনে রাখবেন।”
ক্যাপ্রিওর মৃত্যুতে রোড আইল্যান্ড শোকাহত। অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ড্যান ম্যাকি তাঁকে ‘রোড আইল্যান্ডের গর্ব’ উল্লেখ করে রাজ্যের পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন।
তাঁর ছেলে ফ্রাঙ্ক ক্যাপ্রিও জুনিয়র বলেন: “আমার বাবা সবসময় দানশীল ছিলেন। অন্যকে সাহায্য করাই ছিল তাঁর জীবনের মূল লক্ষ্য। আমরা যদি ভালো কাজ চালিয়ে যাই, তাঁর উত্তরাধিকার বেঁচে থাকবে।”
ফ্রাঙ্ক ক্যাপ্রিও শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষকে প্রভাবিত করেছেন। তাঁর বিচারশৈলী দেখিয়েছে, আদালতের আসন থেকেও মানবিকতা ও সহানুভূতি ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব।