লন্ডন থেকে ‘আশীর্বাদ’ নিয়ে এসেছেন তামিম, দাঁড়াবেন বিসিবি নির্বাচনে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
The upcoming BCB election takes a dramatic turn as Mahbubul Anam steps aside, paving the way for Aminul Islam, Faruk Ahmed, and Tamim Iqbal. Returning from London with political blessings, Tamim’s ent..

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন নির্বাচনে নাটকীয় মোড়—মাহবুবুল আনামের সরে দাঁড়ানোর পর সভাপতি পদে আমিনুল ইসলাম, ফারুক আহমেদ ও তামিম ইকবালের নাম জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে। লন্ডন থেকে রাজনৈতিক আশীর্বাদ নিয়ে তামিমের প্রত্যাবর্তন নির্বাচনে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনে চমকপ্রদ মোড় এসেছে। দীর্ঘদিন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা মাহবুবুল আনাম অবশেষে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার এই সিদ্ধান্তে সভাপতি পদ নিয়ে নতুন সমীকরণ তৈরি হয়েছে। আগামী অক্টোবরেই নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, বিষয়টি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

মাহবুবুল আনামের না দাঁড়ানোয় সভাপতি হওয়ার দৌড়ে উঠে এসেছে তিনটি বড় নাম—বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদ এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এছাড়াও রাজনৈতিকভাবে আরও কয়েকজনের নাম ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, পরিস্থিতি এমন দিকে যাচ্ছে যে, বিসিবিতে নির্বাচনের পরিবর্তে একটি অ্যাডহক কমিটি গঠনই বেশি সম্ভাব্য হয়ে উঠছে।

নির্বাচন হলে আবারও সবচেয়ে বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবেন আমিনুল ইসলাম। বিসিবির নির্বাচনী প্রক্রিয়া ঘিরে আগে থেকেই নানা সমালোচনা থাকলেও বাস্তবে অনেক কিছুই অনিয়মতান্ত্রিকভাবে হয়ে থাকে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে কাউন্সিলর বানিয়ে সদস্যদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে প্রার্থী নির্ধারণ করা নতুন কিছু নয়। শুরুতে নিজের অবস্থান পরিষ্কার না করলেও পরে সভাপতি হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন আমিনুল। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এএসিসি) সভা নিয়ে ভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে তিনি বুঝতে পেরেছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) চাকরি পাওয়া তার পক্ষে কঠিন হবে। তাই বিসিবিতেই টিকে থাকার লড়াই চালাচ্ছেন তিনি।

অন্যদিকে, ফারুক আহমেদকেও সরিয়ে দেওয়া হলেও তিনি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার হাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী ক্লাব এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পরিচালকও তাকে সমর্থন করতে প্রস্তুত। রাজনৈতিক সমর্থন পেলে তিনিও দৌড়ে শক্ত অবস্থান নিতে পারেন।

সবচেয়ে আলোচিত নাম অবশ্য তামিম ইকবাল। দেড় মাস আগে তিনি লন্ডনে গিয়েছিলেন এবং একটি সূত্র দাবি করেছে, সেখান থেকে তিনি একজন শীর্ষ রাজনৈতিক নেতার সরাসরি আশীর্বাদ নিয়ে দেশে ফিরেছেন। ফলে বিসিবির নির্বাচনে তিনি এখন অন্যতম আলোচিত প্রার্থী। বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুসারে মোট ১৭১ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৭৬ জন ঢাকার ক্লাব থেকে আসে। আবার বোর্ডের ২৫ সদস্যের মধ্যে ১২ জনের আসন ক্লাব ক্রিকেট থেকে। ফলে ঢাকার ক্লাবগুলো যাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে, তাদের সমর্থন পাওয়া নির্বাচন জয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এই ক্লাবগুলো পরিচালনায় প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়, যা কেবলমাত্র প্রভাবশালী ব্যক্তিরাই সামলাতে পারেন। তামিম ইকবাল সেই দিক থেকে সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন বলেই মনে করছেন অনেকেই।

অতীতে দক্ষ ক্রিকেট সংগঠক হিসেবে পরিচিত সৈয়দ আশরাফুল হকের নামও শোনা গিয়েছিল। তবে টেস্ট মর্যাদার ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাকে কোনো আমন্ত্রণ না জানানোয় বোঝা যাচ্ছে, তিনি মূল তালিকায় নেই।

এদিকে বিসিবির ভেতরে ভিন্ন একটি ধারণাও জোরালো হচ্ছে—এবার হয়তো নির্বাচনের পথে যাওয়া হবে না। বরং একটি অ্যাডহক কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তীকালীন সময় সামলানো হবে। সূত্র জানিয়েছে, এই কমিটিতে বর্তমান পরিচালকদের মধ্যে কেবল ফাহিম সিনহাকে রাখা হচ্ছে, বাকিদের বাদ দেওয়া হবে। কারণ ফাহিম সিনহার এক ঘনিষ্ঠজন বিসিবির উপদেষ্টা হওয়ায় তাকে জায়গা দেওয়া নিশ্চিত।

সব মিলিয়ে, বিসিবির আসন্ন নির্বাচন ঘিরে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। একদিকে রাজনৈতিক প্রভাব, অন্যদিকে প্রভাবশালী ক্লাবগুলোর সমর্থন—সবকিছু মিলিয়ে সভাপতি হওয়ার দৌড় আরও বেশি রোমাঞ্চকর হয়ে উঠছে। আর এই দৌড়ে লন্ডনফেরত তামিম ইকবাল যে নতুন চমক, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।

No comments found