বিলুপ্তির পথে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে বাঁশ নির্ভর কুটির শিল্প। বাঁশের দাম বৃদ্ধি, অর্থের অভাব, তৈরি জিনিসের দাম কম, প্লাস্টিক সামগ্রীর সহজলভ্যতা সব মিলিয়ে বন্ধ হতে চলেছে বাঁশ নির্ভর কুটির শিল্প।
এই শিল্পে জড়িত কারিগররা তাদের পূর্বপুরুষের পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে বাধ্য হচ্ছেন, কারণ বাঁশের তৈরি পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে ।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা কমে যাওয়ায় এবং বাঁশের দাম বেড়ে যাওয়ায় এই শিল্পের কারিগররা তাদের ঐতিহ্যবাহী পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন ।
এ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পরিবারগুলো বাপ-দাদার আমল থেকে এ পেশায় নিয়োজিত। বাঁশ দিয়ে গৃহস্থলির বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করে জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করে তারা। কৃষি কাজে ব্যবহৃত এসব উপকরণের মধ্যে কুলা, ডালি, টুপরি, ঠালা, চালনা, চাঁটাই, ডোল, বের, ঝাড়ু ইত্যাদি পণ্য তৈরি করে স্থানীয় হাট-বাজারে বিক্রি করে স্বাছন্দ্যে চলতো তাদের ঘর-সংসার। মাঝে মধ্যে উপজেলার বাইরে যেত তাদের নিপুণ হাতে বোনা এসব পণ্য। বর্তমানে বাঁশের দাম বৃদ্ধি ও বাঁশের জায়গায় প্লাস্টিক সামগ্রীর স্থান দখলেই যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের। এ পেশায় আগের মতো আয় না আসায় চলছে না তাদের সংসারের চাকা।
ধানের মৌসুমে এসব পণ্যের চাহিদা বেশি হলেও এবারে চাহিদা তুলনামূলক কম। ধানের দাম কম হওয়ায় এসব পণ্যের চাহিদাও কম।
জানা গেছে, বাঁশের কাজে আগের মতো আর লাভ হয় না। একটি বাঁশ ২০০-৩০০ টাকায় কিনে দুদিন খেটে যে পণ্য তৈরি করা হয় তার বাজার দামে অনেক লোকসান হয়। এ শিল্পের বিকাশ ও মান উন্নয়নে প্রয়োজন শুধু সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার অনুদান, প্রশিক্ষণ এবং পৃষ্ঠপোষকতা করা গেলে এ শিল্প টিকে থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।