close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

লালবাগ ট্রাফিক বিভাগের উদ্যোগে ট্যাগ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত..

Abdul Awal avatar   
Abdul Awal
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক লালবাগ বিভাগের উদ্যোগে ট্রাফিক অ্যাসিস্ট্যান্স গ্রুপ (TAG) সদস্যদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজধানীর লালবাগে উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) কা..

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক লালবাগ বিভাগের উদ্যোগে ট্রাফিক অ্যাসিস্ট্যান্স গ্রুপ (TAG) সদস্যদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রাজধানীর লালবাগে উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) কার্যালয়ে আয়োজিত এ সভায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা, সদস্যদের নিরাপত্তা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং সামাজিক অংশগ্রহণমূলক কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

 

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মো. আনিছুর রহমান, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-অ্যাডমিন, প্ল্যানিং অ্যান্ড রিসার্চ), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

সভাপতিত্ব করেন জনাব মো. মফিজুল ইসলাম, উপ-পুলিশ কমিশনার, ট্রাফিক লালবাগ বিভাগ।

 

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জনাব আবু সাঈদ, অ্যাডিশনাল ডেপুটি কমিশনার (এডিসি), ট্রাফিক লালবাগ বিভাগ।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জনাব নাজমুল হক, সহকারী কমিশনার (ফুলবাড়িয়া জোন) এবং জনাব মাহতাব হোসেন, সহকারী কমিশনার (লালবাগ জোন)।

 

জনাব আনিসুর রহমান বলেন,

 

> “তোমরা আমাদের সাহস। যেভাবে ৫ আগস্টের পর তোমরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে এসেছিলে, তা স্মরণীয়। টাকার জন্য নয়—তোমরা দায়িত্ববোধ থেকে কাজ করেছো। এই আত্মত্যাগই তোমাদের আলাদা করেছে।”

 

তিনি ট্যাগ সদস্যদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক ও দক্ষতা উন্নয়নমূলক কর্মসূচির ঘোষণা দেন:

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উল্লিখিত গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা:

 

স্পেশাল পুলিশের স্বীকৃতি:

ট্যাগ সদস্যরা ‘স্পেশাল পুলিশ’ হিসেবে স্বীকৃত—১৮৬১ সালের আইন অনুসারে। জনগণের সামনে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরার জন্য ডিসিপ্লিন, আচরণ, গেটআপ ঠিক রাখা জরুরি।

 

প্রচার বাড়াতে মিডিয়া সেল:

প্রচার বাড়াতে ছোট ভিডিও, সচেতনতা রিল এবং ফিল্ড ফুটেজ তৈরি করতে উৎসাহ দেন। উল্টো পথে গাড়ি চললে একজন কথা বলবে, অন্যজন ভিডিও করবে।

 

সামাজিক দায়িত্ব:

বয়স্কদের রাস্তা পার করানো, ফুটপাত ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া, ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে সক্রিয়তা—এসব সামাজিক দায়িত্ব পালনে ট্যাগ সদস্যদের অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

 

কিশোর গ্যাং ও মাদকবিরোধী তথ্য সংগ্রহ:

গোপনে তথ্য দিয়ে সমাজকে নিরাপদ করতে সহায়তা করার পরামর্শ দেন।

 

ড্রাইভিং শেখা ও বিদেশে চাকরির সুযোগ:

আগামী মাসের ১৫ তারিখ থেকে কম খরচে ড্রাইভিং শেখার সুযোগ দেওয়া হবে। তিনি জানান, জাপানে ১ লাখ দক্ষ ড্রাইভারের চাহিদা রয়েছে, যাদের মাসিক বেতন ২ লক্ষ টাকারও বেশি হতে পারে।

 

পাসপোর্ট ও এনআইডি সহজীকরণ:

ট্যাগ সদস্যদের পাসপোর্ট বা এনআইডি সমস্যা থাকলে লাইনে না দাঁড়িয়ে সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।

 

চিকিৎসা সুবিধা:

জনপ্রিয় হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা ব্যয়ে ২৫% ডিসকাউন্ট সুবিধা চালু করা হবে।

 

নিরাপত্তা সরঞ্জাম:

ভবিষ্যতে উন্নত সেফটি ভেস্ট, বাংলায় নামপ্লেট, অ্যাডজাস্টেবল বেল্টে হ্যান্ডকাফ, পেপার স্প্রে, ট্রেজার গানসহ প্রয়োজনীয় গিয়ার প্রদান করা হবে।

 

সেলফ ডিফেন্স ট্রেনিং:

রাজারবাগে আনআর্মড সেলফ-ডিফেন্স ট্রেনিং দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান।

 

পরিবহন মালিকদের সঙ্গে বৈঠক:

বাসে ট্যাগ সদস্যরা উঠলে ভাড়া না নেওয়ার বিষয়ে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে মিটিং করানো হবে।

 

স্কুল-কলেজে সচেতনতা কার্যক্রম:

প্রত্যেক স্কুলে ট্রাফিক সচেতনতা ক্লাসে অংশগ্রহণ করবে ট্যাগ সদস্যরা—বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমে।

 

কালচারাল প্রোগ্রাম:

আগামী শীতে ৮টি ট্রাফিক বিভাগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। সেখান থেকে বাছাইকৃত সদস্যদের নিয়ে 'Best of the Best' প্রোগ্রাম হবে।

 

বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি:

ট্যাগ সদস্যরা নিজেরা চাঁদা তুলে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় গাছ রোপণ করবে।

 

ট্যাগ সদস্যদের প্রতি সতর্কতা:

তিনি বলেন, “শৃঙ্খলা বজায় রেখে কাজ করবে। কেউ যেন কোনোভাবে বিতর্কিত না হয়। নিজের ক্ষমতার বাইরে কাজ করা যাবে না। নিজেদের মধ্যে সংঘাত নয়, দেশের জন্য কাজ করতে হবে।”

 

ওয়্যারলেস ব্যবস্থার পরিকল্পনা:

প্রশ্নোত্তর পর্বে এক সদস্যের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, স্পন্সর পেলে ওয়্যারলেস ব্যবস্থাও চালু করার চিন্তা রয়েছে।

 

সভাপতির বক্তব্যে জনাব মো. মফিজুল ইসলাম বলেন,

 

> “আমরা লালবাগ ট্রাফিক বিভাগ সব সময় ট্যাগ সদস্যদের পাশে আছি। উপ-পুলিশ কমিশনার স্যারের নির্দেশনা অনুসারে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।”

 

ডিভিশন সুপারভাইজারের বক্তব্য:

ট্যাগ সদস্যদের পক্ষ থেকে মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন,

“নিরাপদ সড়ক ও শৃঙ্খলিত ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়ে তোলাই আমাদের মূল লক্ষ্য। ক্লান্তি, রোদ বা বৃষ্টি—কিছুই আমাদের থামাতে পারে না।

আমরা বিশ্বাস করি, পরিবর্তন আমাদের থেকেই শুরু হয়। আর এই দায়িত্ববোধ থেকেই আমরা দেশের জন্য কাজ করে যেতে চাই।”

 

 

অনুষ্ঠানটি ছিল উন্মুক্ত মতবিনিময়ের মাধ্যমে ট্রাফিক সহায়তা কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী ও সমন্বিত করার একটি পদক্ষেপ।

Keine Kommentare gefunden