close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়েকের তন্তর অংশ যেন মরনফাঁদ

সাইদুল ইসলাম avatar   
সাইদুল ইসলাম
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের উন্নয়ন প্রকল্পের ধীরগতির কাজ জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।..

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চারলেন মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি হতাশাজনক। ২০২০ সালে শুরু হওয়া ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকার এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের জুনে। এর মধ্যেই কয়েকবার পিছিয়েছে প্রকল্প মেয়াদ।
 
গতবছর আগস্ট মাসে বিগত সরকার দেশ ত্যাগের পর নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ভারতে চলে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা,পরে নভেম্বরে উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের পর তারা আবার কাজে ফিরলেও মালামাল চুরি সহ নানান কারণ দেখিয়ে কচ্ছপ গতিতে চালাচ্ছে মহাসড়কের নির্মাণ কাজ। যার এখন পর্যন্ত অগ্রগতি মাত্র ৫৭ শতাংশ, আর কাজ শেষ করতে আরও দুই বছরের সময় বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
 
 প্রকল্পটি তিনটি প্যাকেজে বিভক্ত। যারমধ্যে দ্বিতীয় প্যাকেজে সরাইল থেকে তন্তর অংশে ৫২ শতাংশের অর্ধেক কাজ হলেও তৃতীয় প্যাকেজে তন্তর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর অংশের কাজ একেবারেই হয়নি;যার ফলে তন্তর বাজার এলাকায় দিনের পর দিন কষ্ট করে আসছে এ মহাসড়কে চলাচলকারী লাখ লাখ মানুষ। এ অবস্থায় মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ জনদুর্ভোগ। গর্ত,কাদা ও পানি জমে সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যানজট, দুর্ঘটনা ও অতিরিক্ত সময় নষ্ট হওয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা ।
 
তন্তর বাজার পরিচালনা কমিটিরি সভাপতি লোকমান খন্দকার বলেন, এই মহাসড়কের বেহাল দশার জন্য আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য ডুবে যাওয়ার পথে। সড়কে হাটু সমান কাদা পানি লেগে থাকার কারণে এপারের মানুষ অন্য পারে যায়না। পাশাপাশি এ সড়কে কিছুদিন পরপরই ট্রাক,সিএনজি অটোরিকশা উল্টায় ও যাত্রীরা ‍নিদারুণ কষ্ট সহ্য করে যাচ্ছে। আমরা প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের অনুরোধ করলে তারা এসে গা বাঁচানোভাবে সড়কে মাটি ফেলে যায়, যাতে ভোগান্তি আরো বৃদ্ধি হয়।
 
স্থানীয় বাসিন্দা বশির আহমেদ বলেন, ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনের গাফিলতিতে আমরা দীর্ঘ ৭ বছর ধরে মারাত্মক কষ্টে আছি, বর্তমান সরকারের উচিত হবে ভারতীয় ঠিকাদার থেকে কাজ নিয়ে দেশীয় ঠিকাদার নিয়োগ করে খুব দ্রুত কাজটি সমাপ্ত করে দেয়া।
 
জাকির নামক এক ট্রাক ড্রাইভার বলেন, আমরা ইচ্ছে করেই এই মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করিনা,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পুরোটা সড়ক জুড়েই প্রচুর খানাখন্দ ও বড় বড় গর্ত হয়ে আছে। প্রায়সময় আমাদের গাড়ির চাকা দেবে যায় ও গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। সরকারে নিকট দ্রুত সড়কটি নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
 
কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে আশুগন্জ-আখাউড় চারলেন মহাসড়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. শামিম আহমেদ বলেন, কাজের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৫৭ ভাগ।প্রকল্পের অনুমোদিত মেয়াদ চলতি বছরের জুনে শেষ। সেক্ষেত্রে আমাদের কাজ যেহেতু এখনো বাকি এবং বিভিন্ন কারণে প্রকল্পের কাজ দেরি হয়েছে। সেকারণে আমরা নতুন করে ২ বছর মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছি। বর্তমানে যে দুটি প্যাকেজের কাজ হচ্ছে তার মধ্যে  সাড়ে ৭ কিলোমিটার সড়ক অত্যন্ত দুরাবস্থায় রয়েছে। যেগুলো রিপিয়ার করে আমরা যানবাহন চলাচলের উপযোগী রাখছি। পাশাপাশি তন্তর বাজারে গতকালও রিপেয়ারিং এর কাজ করেছি।

No comments found