রাজনীতি থেকে বঞ্চিত শহীদ পরিবারদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বললেন, যারা আত্মাহুতি দিয়েছেন, তাদের দিকে কেউ ফিরেও তাকায়নি।
সংস্কার যদি মানুষের কল্যাণে না আসে, তাহলে সেই সংস্কার মূল্যহীন — এমন বক্তব্য দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শহীদ পরিবারের পুনর্বাসনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর বনানীতে শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত এক মানবিক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “স্বাধীনতা-গণতন্ত্রের আন্দোলনে যারা আত্মত্যাগ করেছেন, যারা নিখোঁজ হয়েছেন বা শহীদ হয়েছেন — তাদের পরিবার আজও অসহায়। পরিবর্তনের নামে বহুজন ক্ষমতায় এসেছে, মন্ত্রী হয়েছে, বড় ব্যবসা চালাচ্ছে, রাষ্ট্রের সম্পদ দখলে নিয়েছে। অথচ যারা সব দিয়ে গেছে, তাদের দিকে রাষ্ট্র ফিরে তাকায়নি।”
সরকারের প্রতি কড়া সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “বর্তমান সরকার শিশুদের ভবিষ্যৎ কিংবা শহীদ পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের জন্য কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে যদি কোনো বিবেকবান সরকার আসে, তারা অবশ্যই শহীদ পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াবে। আর বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করব।”
তিনি আরও বলেন, “এই পরিবারগুলোকে সাহায্য করা শুধু দায়িত্ব না, এটা একটি জাতির নৈতিক কর্তব্য। যারা সব হারিয়েছে, তাদের জন্য রাষ্ট্র কিছু না করলে আমরা সবাই দায়ী থাকব।”
গুম হওয়া পরিবারগুলোর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “গুম কমিশন একটি প্রতিবেদন জমা দিলেও, বাস্তবে নিখোঁজদের সন্ধানে কোনো অগ্রগতি নেই। আমরা জানি না তাদের ফিরিয়ে দিতে পারব কি না। কিন্তু এই পরিবারগুলো যাতে জীবনের ন্যূনতম নিরাপত্তা ও সম্মান নিয়ে বাঁচতে পারে, তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”
বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি বলেন, “রাজনীতি শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। রাজনীতি হল মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আমরা যদি একদিন সেই সুযোগ পাই, শহীদ পরিবারের মুখে হাসি ফোটাবার দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত শহীদ পরিবারের সদস্যরা আবেগঘন বক্তব্যে তাদের দুঃখ-কষ্ট ও অবহেলার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। অনেকেই বলেন, তারা এখনও কোনো প্রকার সরকারি সহায়তা পাননি। এমন বাস্তবতায় মির্জা ফখরুলের বক্তব্যে কিছুটা স্বস্তি পেলেও, কার্যকর উদ্যোগের অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।