৫ আগস্টের পর দেশের মানুষ ভেবেছিল—যারা দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম করে, রক্ত ও জীবন দিয়ে ভোটাধিকার ফিরিয়ে এনেছে, ফ্যাসিস্ট শাসনের বিদায় ঘটিয়েছে—তারা গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে রাজনীতি করবে।
কিন্তু বাস্তব চিত্র তার উল্টো। বর্তমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়া দেখে এখন প্রশ্ন জাগে—এভাবে কি সত্যিই কোনো পরিবর্তনের আশা করা যায়?
একটি গণতান্ত্রিক দলের মূল শক্তি হলো তৃণমূল। কিন্তু দলীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় সেই তৃণমূল, জেলা বা উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মতামত আজ উপেক্ষিত। কোনো পরামর্শ, কোনো অংশগ্রহণ নয়—সব সিদ্ধান্ত এখন কেন্দ্রের টেবিলেই গৃহীত হচ্ছে।
ফলে মনোনয়নপ্রাপ্তরা স্বাভাবিকভাবেই ধরে নিচ্ছেন, দলের তৃণমূল বা স্থানীয় নেতৃত্বের কোনো গুরুত্ব নেই; বরং গুরুত্ব পাচ্ছে তেলবাজি, অর্থ কিংবা প্রভাবের মাপকাঠি।
এমন প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জনগণের নয়, বরং প্রভাবশালী কেন্দ্রের প্রতিনিধি হয়ে ওঠে।
ভোটের আগ পর্যন্ত তৃণমূলের প্রয়োজন থাকে, কিন্তু নির্বাচনের পর তারা হয়ে যায় অবহেলিত। ব্যক্তিস্বার্থ বা ক্ষমতার মোহে অনেকেই আজ আবেগে আপ্লুত হয়ে মনোনয়ন প্রাপ্তদের পেছনে ছুটছেন, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সেই সম্পর্ক ফিকে হয়ে যাবে—এটাই বাস্তবতা।
এই ক্যাপিটালাইজড রাজনৈতিক চর্চা যদি চলতে থাকে, তবে অদূর ভবিষ্যতে রাজনীতিতে “তৃণমূল” বলে কিছু থাকবে না। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কেউ আর রাজনীতি করতে আগ্রহ বোধ করবে না।
গণতন্ত্র হারাবে তার প্রাণশক্তি, রাজনীতি হারাবে জনগণের ভিত্তি।



















