কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আমন ধানের ক্ষেতে ইঁদুরের ভয়াবহ তাণ্ডবের ফলে কৃষকরা ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। ইঁদুরের আক্রমণে জমির পর জমি ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, যা কৃষকদের জন্য এক বিরাট আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
কটিয়াদি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ইঁদুরের আক্রমণ এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, কৃষকরা প্রতিদিন সকালে মাঠে গিয়ে দেখতে পাচ্ছেন তাদের জমির ধান কেটে খেয়ে ফেলেছে ইঁদুর। এর ফলে কৃষকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
কৃষক চুন্নু মিয়া জানান, "আমার দুটি জমির অর্ধেকের বেশি ধান ইঁদুরে কেটে ফেলেছে। নিজেরা ফাঁদ পেতে এবং বিষ ছড়িয়ে চেষ্টা করেছি—কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।"
আরেক কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, "মাঠে কৃষি কর্মকর্তা বা ব্লক সুপারভাইজারের দেখা মেলে না। এখন নিজেরাই লড়াই করছি ইঁদুরের সঙ্গে।"
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বা সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তার পক্ষ থেকে এখনো কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকেরা। স্থানীয়রা জানান, দ্রুত ইঁদুর নিধন কার্যক্রম শুরু না হলে এ অঞ্চলের অধিকাংশ ধানক্ষেত নষ্ট হয়ে যাবে।
কটিয়াদির কৃষকরা প্রতি বছর আমন মৌসুমে ধান উৎপাদন করে থাকেন, যা তাদের প্রধান আয়ের উৎস। ইঁদুরের আক্রমণে এই ধান নষ্ট হয়ে গেলে তাদের আর্থিক অবস্থার অবনতি ঘটবে এবং সার্বিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে। কৃষকদের মতে, প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, ইঁদুর নিধনে সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এতে ফাঁদ পাতা, বিষ প্রয়োগ এবং কৃষিজমির সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে ইঁদুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতে পারে। এছাড়া, প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষকদের সহায়তা প্রদান এবং সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা উচিত।
এই সংকট কৃষকদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এর দ্রুত সমাধান না হলে কৃষি উৎপাদনে বড় ধরনের ধাক্কা আসতে পারে। সরকারের উচিত দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো।