‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান শুধু ইতিহাস নয়, এটি আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনার শিকড়’ — এই বার্তা নিয়েই এগিয়ে এলো দৃশ্যমাধ্যম সমাজ।
রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫ সকাল ১১টায় ঢাকার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার লেভেল ৬–এর কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দৃশ্যমাধ্যম সমাজ ঘোষণা দেয় তাদের আসন্ন সাংস্কৃতিক কর্মসূচির। শিরোনাম— “কইলজ্যা কাঁপানো ৩৬ দিন: জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও সাংস্কৃতিক নির্মাণ”।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রাণ হারানো শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা ঘটে।
মূল বক্তব্য পাঠ করেন সাংস্কৃতিক জগতের চার উজ্জ্বল মুখ—আকরাম খান, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, ফারিহা শামস সেওতি এবং সরকার প্রতীক। বক্তব্যে তাঁরা তুলে ধরেন, “জুলাইয়ের ৩৬ দিন ছিল ইতিহাসের উত্তাল অধ্যায়। সেই সময় গণচেতনার বিস্ফোরণ হয়েছিল, যা আজও আমাদের অনুপ্রেরণা।” বক্তারা জানান, এই আন্দোলন শুধুমাত্র রাজনীতি নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক বিপ্লব ছিল।
এই কর্মসূচির মূল আয়োজন হবে ২ আগস্ট ২০২৫, দিনব্যাপী, জাতীয় জাদুঘরে। সেখানে থাকবে চিত্র প্রদর্শনী, আলোকচিত্র, তথ্যচিত্র প্রদর্শন, মুক্ত আড্ডা, নাটক ও সংগীতানুষ্ঠান। কর্মসূচি ঘোষণা করেন জাহিন ফারুক আমিন এবং ধ্রুব হাসান।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও সমাজকর্মী তাসলিমা আখতার।
এই সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন—
-
অভিনেত্রী ও সমাজকর্মী আজমেরি হক বাঁধন
-
পরিচালক তানিম নূর
-
প্রখ্যাত প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা শাহীন দিল-রিয়াজ
-
আলোকচিত্রী মুনেম ওয়াসিফ
-
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সামিনা লুৎফা
-
নাট্যব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান আসাদ
-
সংগীতশিল্পী কৃষ্ণকলি ইসলাম
-
গবেষক মুশফিকুর রহমান মঞ্জু
-
লেখক মোহাম্মদ আলী হায়দার
-
নাট্যশিল্পী বিথী ঘোষ
-
এবং অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা
উপস্থিত ছিলেন আরও অনেকে—হাবিবুর রহমান, বরকত হোসেন পলাশ, জগন্ময় পাল, মিতু রহমান, রাফি উদ্দিন ও শাদাব শাহরুখ হাই।
দৃশ্যমাধ্যম সমাজের পক্ষ থেকে একটি ভিডিও চিত্র দেখানো হয়, যেখানে ফুটিয়ে তোলা হয় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট, প্রতিরোধের ভাষা ও বর্তমান প্রজন্মের দায়িত্ববোধ।
সংবাদ সম্মেলনের শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে স্পষ্ট করে জানানো হয়, এই কর্মসূচি কোনো রাজনৈতিক দলের ছায়ায় নয়, বরং জনগণের গণআন্দোলনের সাংস্কৃতিক প্রতিবিম্ব হিসেবেই দেখা হোক।
দৃশ্যমাধ্যম সমাজের এই আয়োজন নিছক স্মরণ নয়—এটি একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সূচনা। যেখানে ইতিহাসকে শুধু মনে রাখার জন্য নয়, বরং পরিবর্তনের শক্তি হিসেবে তুলে ধরা হবে।