বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিনে কেক না কেটে সারা দেশে দোয়া মাহফিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। রিজভী আহ্বান জানিয়েছেন দেশবাসীর কাছে তার রোগমুক্তির জন্য দোয়ার।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিনকে কেন্দ্র করে দলীয়ভাবে একটি ভিন্নধর্মী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এ উপলক্ষে কোনো আনুষ্ঠানিক কেক কাটা অনুষ্ঠান হবে না। বরং দলটি সারা দেশে দোয়া মাহফিল ও প্রার্থনার আয়োজন করবে, যেখানে খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দেশব্যাপী নেতাকর্মী ও সমর্থকদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, “আমাদের নেত্রী গুরুতর অসুস্থ। তার জন্য কেক কাটার পরিবর্তে আমরা সর্বশক্তি দিয়ে দোয়া ও প্রার্থনায় অংশ নেব। সারা দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের দলীয় কার্যালয়ে ও মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।”
রিজভী আহ্বান জানান, শুধু বিএনপি নয়, দেশপ্রেমিক প্রতিটি নাগরিক যেন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য দোয়া করেন। তিনি বলেন, “আমাদের নেত্রীর শারীরিক অবস্থা এখনও গুরুতর। তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। দেশবাসীর দোয়া ছাড়া আমরা এই সংকট অতিক্রম করতে পারব না।”
এছাড়া, সংবাদ সম্মেলনে তিনি খালেদা জিয়ার অবদানের কথাও স্মরণ করেন। তিনি বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তার নেতৃত্বে বিএনপি সবসময় গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারের জন্য আন্দোলন চালিয়ে গেছে। আজ তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হলেও তার আদর্শ ও দৃঢ় মনোবল আমাদের পথ দেখাচ্ছে।”
এবারের জন্মদিনে কেক না কাটার সিদ্ধান্ত দলের ভেতরে ও বাইরে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি একটি প্রতীকী বার্তা — যে খালেদা জিয়া ও তার দল বর্তমানে রাজপথের লড়াই এবং নেত্রীর শারীরিক অবস্থাকে গুরুত্ব দিচ্ছে, উল্লাস বা আনুষ্ঠানিক উদযাপনকে নয়।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়া ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে, এবং তিনি দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার জন্মদিন উপলক্ষে অতীতে দলীয় কার্যালয়ে কেক কাটা ও নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন হলেও এ বছর তা বাতিল করে শুধুমাত্র দোয়া মাহফিলের আয়োজনই করা হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী শুক্রবার জুমার নামাজের পর সারা দেশের সব মসজিদে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর জন্য আলাদা প্রার্থনার ব্যবস্থাও থাকবে, যাতে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়। বিএনপি নেতারা মনে করছেন, এই উদ্যোগ শুধু রাজনৈতিকভাবে নয়, মানবিক দিক থেকেও একটি ইতিবাচক বার্তা দেবে।