close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

কেরানীগঞ্জের কোরবানির পশু খামারিরা লাভের আশায় ব্যস্ত

M R Jewel avatar   
M R Jewel
কেরানীগঞ্জের খামারিরা কোরবানির পশু প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভারতীয় গরু না এলে তারা ন্যায্য মূল্য পাওয়ার আশা করছেন।..

কেরানীগঞ্জের খামারি ও কৃষকরা কোরবানির পশু প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ছোট-বড় সকল খামারিরা কোরবানিতে বাড়তি লাভের আশায় নিজেদের পশুগুলোকে হাটে তোলার জন্য প্রস্তুত করছেন। বিগত দিনের লাভ-লোকসানের হিসাব মিলিয়ে মুনাফা ঘরে তুলতে আশাবাদী তারা। তারা বিশ্বাস করেন, সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু না আসলে গরুর ন্যায্য মূল্য পাবেন।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কেরানীগঞ্জে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৬ শত পশুর খামার রয়েছে। এসব খামারে প্রায় ৫ হাজার ৮৪৭টি ষাঁড়, ২৩৫টি বলদ, ৩০০টি গাভি ও ২০০টি মহিষ রয়েছে। এছাড়া ২ হাজার ৫৯টি বিভিন্ন জাতের ছাগল ও ১১১টি ভেড়া রয়েছে। উল্লেখযোগ্য খামারগুলোর মধ্যে নজরুল ইসলাম অ্যাগ্রো ফার্ম, মালেক শিকদার অ্যাগ্রো ফার্ম, আনোয়ার অ্যাগ্রোভেট, শরীফ অ্যাগ্রোভেট, আলম ডেইরী ফার্ম উল্লেখযোগ্য।

তেঘরিয়া, কোন্ডা, জিনজিরা, শুভাঢ্যা, রাজেন্দ্রপুর, আব্দুল্লাহপুর, দঁড়িগাও, খোলামোড়া, নরুন্ডী, শাক্তা, আটি, কলাতিয়া, তারানগর ও হযরতপুর ইউনিয়নের অনেকেই কোরবানির পশু পালন করে নিজেরা কোরবানি দেয়ার পাশাপাশি ব্যবসার উদ্দেশ্যে বিক্রি করেন। এসব পশু পালনকারী কৃষকদের গোয়ালে দেশীয় গরুর পাশাপাশি ভারত, নেপাল ও ভুটানসহ বিভিন্ন দেশের গরু রয়েছে।

পেশাদার গরু-ছাগল ব্যবসায়ীরা কোরবানির ৭-৮ মাস আগেই পছন্দের পশু ক্রয় করে যত্নের সাথে লালন পালন করেন। স্থানীয় এসব পশু পালকদের বেশির ভাগ কোরবানির পশুই নিজ নিজ গোয়াল থেকেই বিক্রি হয়। এছাড়া কেরানীগঞ্জের অভ্যন্তরীণ ১১টি পশুর হাট এবং রাজধানীর নয়াবাজার, শ্যামপুর ও পোস্তগোলা শ্মশানঘাটসহ বিভিন্ন হাটে বিক্রি হয়ে থাকে।

ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা প্রাণী সম্পদ বিভাগের পরামর্শে কৃমিনাশকসহ নির্দিষ্ট রোগের ওষুধ খাওয়ান। তবে ক্ষতিকর ইঞ্জেকশন ও ট্যাবলেট পরিহার করে সবুজ ঘাস ও খড়ের পাশাপাশি খৈল, গুড়া, ভুসি খাইয়ে পশুগুলোকে মোটাতাজা করে থাকেন। কোনও ভ্যাকসিন ছাড়াই প্রস্তুত করা হয়েছে দেশী, নেপালি, হারিয়ানা, অস্ট্রেলিয়ার ফ্রিজিয়ামসহ নানা জাতের গরু।

ইকুরিয়ার গরুর খামারি রফিক মিয়া বলেন, ‘এ বছর আমার ফার্মে শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির গরু ও মহিষ আছে। আমাদের পালিত পশুকে খৈল, ভুসি, কুড়া, কচুরিপানা ও প্রাকৃতিক ঘাস খাওয়াই। আমার উদ্দেশ্য কেবল ব্যবসায়িক নয়, ক্রেতারা যাতে ভালো মানের পশু কোরবানির মাধ্যমে স্বাস্থ্যসম্মত নির্ভেজাল গোশত খেতে পারে সেদিকেও আমরা খেয়াল রাখি।’

খামারি আহাম্মেদ মিয়া বলেন, ‘কোরবানির হাটে বিক্রি করার জন্য দীর্ঘ ছয় মাস ধরে ৪০টি গরু নিয়ে খামার গড়ে তুলেছি। ২২ লাখ পাঁচশ টাকা দিয়ে এসব গরু কিনেছিলাম। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতি অনুসরণ করে গরুগুলোকে লালন পালন করেছি। গবাদি পশুর খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যয়ের পরিমাণও বেড়েছে। কোরবানির হাটে গরুগুলো বিক্রি করে লাভবান হতে পারবো বলে আশা করছি।’

কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সাত্তার বেগ বলেন, ‘বাজারে অসুস্থ বা কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা অসুস্থ পশুর দিকে আমাদের নজরদারি রয়েছে। তবে কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করার ওষুধ সেবনে গরুর যে কোনো সময় প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে খামারিদের সতর্ক করা হয়েছে। ভারত থেকে গরু না আসলে এ বছর কেরানীগঞ্জের খামারিসহ প্রান্তিক কৃষকরা বেশ লাভবান হবেন।’

এইসব খামারি ও কৃষকদের প্রচেষ্টা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Inga kommentarer hittades


News Card Generator