গোপালগঞ্জের চলমান উত্তেজনা প্রশমনে মাঠে কঠোর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। কারফিউ জারির পর কন্ট্রোল রুম থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন স্বরাষ্ট্র ও যুব উপদেষ্টা।
গোপালগঞ্জে সৃষ্ট উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের উপদেষ্টারাও এখন সরাসরি পুলিশ কন্ট্রোল রুমে অবস্থান করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।
বুধবার বিকেলে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানান, গোপালগঞ্জে বর্তমানে কারফিউ জারি করা হয়েছে। তিনি দেশের সাধারণ জনগণকে সতর্ক করে বলেন, "জীবন-মৃত্যুর মতো জরুরি না হলে কেউ ঘর থেকে বের হবেন না। সকলকে অনুরোধ করছি, ঘরে অবস্থান করুন এবং গুজবে কান দেবেন না।"
পোস্টে তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, "আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে এবং নিষিদ্ধ সংগঠনের যেকোনো ধরনের উস্কানি বা সহিংসতার চেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে। যারা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে লিপ্ত রয়েছে, তাদের শক্ত হাতে দমন করা হবে এবং অবকাঠামো ভেঙে দেওয়া হবে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও কন্ট্রোল রুমে অবস্থান করছেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ইউনিটকে সমন্বয় করে নির্দেশ দিচ্ছেন। এ সময় স্থানীয় প্রশাসন, র্যাব, পুলিশ, আনসারসহ সব বাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে রাখা হয়েছে।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে রাস্তায় পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে প্রশাসন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে সতর্ক বার্তা দিচ্ছেন এবং স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোর আহ্বান জানাচ্ছেন।
এদিকে, জেলার বেশ কিছু এলাকায় মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত করা হয়েছে যাতে গুজব ও ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল না হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনী কঠোর নজরদারিতে থাকবে এবং কেউ বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গোপালগঞ্জে সাম্প্রতিক সময়ের কিছু ঘটনায় উত্তেজনা বাড়তে থাকে। সেই প্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসন ও কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশনায় এই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কন্ট্রোল রুম থেকে সারা জেলার পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে এবং কোথাও অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সবমিলিয়ে, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের বাহিনী পর্যন্ত সক্রিয় রয়েছে যাতে গোপালগঞ্জে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকে এবং সাধারণ জনগণের জীবন-নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।