কালীগঞ্জে উৎস করের যাঁতাকলে জমি কেনাবেচা স্থবির রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার, বিপাকে সাধারণ..

MD MOLLAH avatar   
MD MOLLAH
****

কালীগঞ্জে উৎস করের যাঁতাকলে জমি কেনাবেচা স্থবির

রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার, বিপাকে সাধারণ মানুষ

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি:

গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় উৎস করের বাড়তি চাপের কারণে অধিকাংশ মৌজায় জমি কেনাবেচা কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে সরকার যেমন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি মহাবিপদে পড়েছেন সাধারণ ভূমি মালিকরা। জরুরি প্রয়োজনে জমি বিক্রি করতে না পেরে অনেক পরিবার মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।

সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত কালীগঞ্জ উপজেলার একমাত্র পৌরসভা এলাকার বাইরে অধিকাংশ মানুষের জীবিকা কৃষিনির্ভর। কিন্তু সার, বীজ, কীটনাশক, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ বিল এবং শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির কারণে কৃষকরা আগেই ক্ষতিগ্রস্ত। এর মধ্যে সন্তানদের উচ্চশিক্ষা, বিদেশে পাঠানো, পরিবারিক চিকিৎসা ব্যয় কিংবা বিবাহসহ জরুরি প্রয়োজনে জমি বিক্রি করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ছেন।

উৎস করের অযৌক্তিক চাপ

রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক ২০২৩ সনের প্রণীত এবং ২৪ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দের সর্বশেষ সংশোধনী গেজেটের ১২৫ ধারা অনুযায়ী “ভূমির উপর উৎস কর বিধি ৬(১)” কার্যকর রয়েছে। গেজেটের ৬ নম্বর ক্রমিক অনুযায়ী কালীগঞ্জ উপজেলার সব মৌজায় দলিলে উল্লেখিত মূল্য্যের ৩% বা শতকপ্রতি ৩০ হাজার টাকা উৎস কর নির্ধারণ করা হয়েছে।

২০২৫–২৬ অর্থবছরের জন্য প্রণীত মৌজাভিত্তিক বাজার মূল্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়—বেশিরভাগ এলাকায় জমির বাজার মূল্য দলিলের খরচের তুলনায় অনেক কম। ফলে জমি কেনাবেচা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।

দানপত্রে দলিল করে রাজস্ব ক্ষতি

জমি বিক্রির জন্য ক্রেতা–বিক্রেতারা দলিল লেখকদের কাছে গেলে তাদের জানানো হচ্ছে যে শতকপ্রতি ৩০ হাজার টাকা উৎস কর না দিলে সাব–কবলা দলিল রেজিস্ট্রি করা যাবে না। বাধ্য হয়ে অনেকেই সাব–কবলা না করে দানপত্রে দলিল করছেন। ফলে সরকার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।

দলিল লেখক ও প্রশাসনের নীরবতা

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ দলিল লেখক ও ভেন্ডর সমিতির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম কাজলের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।

কালীগঞ্জ রেজিস্ট্রি অফিসের সাবরেজিস্টার হাফিজুর রহমানের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ভূমি মালিকরা বলছেন

উৎস করের এই অস্বাভাবিক হার কমিয়ে বাস্তবসম্মত বাজার মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হার নির্ধারণ না করলে কালীগঞ্জে জমি কেনাবেচা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। শুধু কৃষিপ্রধান মানুষের পরিবারই নয়, সরকারও হারাবে কোটি টাকার রাজস্ব।

স্থানীয়রা দ্রুত সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

Nenhum comentário encontrado


News Card Generator