ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বলেছে, জুলাই সনদের আগে ভোটের ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে দলটি নির্বাচন কমিশনের কাছে ৭ দফা প্রস্তাব দিয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ অভিযোগ করেছেন যে, জুলাই সনদ ঘোষণার আগে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ভোটের তারিখ ঘোষণা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নেই, তাই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব না হলে নির্বাচন না করাই ভালো।
বুধবার (১৩ আগস্ট) নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইউনুছ আহমাদ এই মন্তব্য করেন। তিনি জানান, সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে ৭ দফা প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে।
দলটির দেওয়া ৭টি মূল প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে—
প্রথমত, অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে ক্ষমতাসীন দলগুলো স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিরপেক্ষতা ও দায়িত্বশীলতার জন্য প্রশিক্ষণ ও নির্দেশনা দিতে হবে এবং ব্যত্যয় ঘটলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
তৃতীয়ত, সেনাবাহিনীকে শুধু স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নয় বরং প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে মোতায়েন করতে হবে, যাতে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া নিরাপদ থাকে।
চতুর্থত, জুলাই জাতীয় সনদের আলোকে ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের ভিত্তিতে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে।
পঞ্চমত, জনমতের পূর্ণ মূল্যায়ন করে একটি কার্যকর সংসদ গঠনের জন্য সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি (PR System) চালু করতে হবে।
ষষ্ঠত, আওয়ামী লীগসহ যেসব দলকে তারা ‘ফ্যাসিস্ট, খুনি, মানবতা বিরোধী অপরাধী ও আধিপত্যবাদী শক্তির এজেন্ট’ মনে করে, তাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা ও নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।
সপ্তমত, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দখলবাজ, টেন্ডারবাজ ও খুনিদের প্রার্থিতা বাতিল করতে হবে।
ইউনুছ আহমাদ বলেন, এই প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করলে দেশ একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথে এগোতে পারবে। অন্যথায় নির্বাচন নিয়ে জনমনে আস্থার সংকট আরও গভীর হবে।