নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে স্বচ্ছতার অভাব ও জনগণের অনুপস্থিতি নিয়ে তীব্র প্রশ্ন তুলেছেন।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না সম্প্রতি আলোচিত 'জুলাই সনদ'কে কেন্দ্র করে তীব্র ভাষায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, এই ঘোষণাপত্রে বারবার বলা হচ্ছে এটি জনগণের নামে তৈরি, অথচ বাস্তবে জনগণের কোনো অংশগ্রহণ বা মতামত নেওয়া হয়নি।
তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, “এটা কারা করল? কীভাবে করল? জনগণ কি জানে কিছু?” তার এই বক্তব্যে পরিষ্কার হয়ে ওঠে যে, তিনি এই ঘোষণাপত্রের স্বচ্ছতা ও গণতান্ত্রিক গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে গুরুতর সন্দেহ প্রকাশ করছেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “গণআন্দোলনের মাধ্যমে যে সরকার গঠিত হবে, আমরা কেবল তার পক্ষেই থাকবো। আমাদের একমাত্র পক্ষ জনগণ।” তার মতে, এই সনদের আড়ালে এক ধরনের পরিকল্পিত ঐক্যের ছায়া রয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্য হতে পারে একটি পূর্ব নির্ধারিত রূপরেখা বাস্তবায়ন করা—জনগণকে পাশে না রেখেই।
তিনি আরও বলেন, “ভোটাধিকার আদায়ের জন্য এই দেশের মানুষ প্রাণ দিয়েছে। অথচ আজ সেই ভোটের অধিকারকে পাশ কাটিয়ে কেউ কেউ নিজেদের মতো করে একটি সরকার গঠনের পদ্ধতি স্থির করতে চাইছে।” মান্নার মতে, এটি সরাসরি জনগণের ইচ্ছাকে অগ্রাহ্য করার নামান্তর।
বিদেশে বসে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “আপনারা প্যারিসে বসে ঠিক করবেন কে প্রধানমন্ত্রী হবেন? আর আমরা শুধু সমর্থন জানিয়ে যাবো? এটাই কি গণতন্ত্র?” তার এই বক্তব্যে ফুটে ওঠে বিদেশি মঞ্চে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রবণতার প্রতি তীব্র সমালোচনা এবং দেশের বাস্তবতার সঙ্গে তার অসামঞ্জস্যতার দিকটি।
তিনি ‘ঐক্যমত কমিশন’ গঠনের প্রস্তাবকে অবাস্তব এবং বিভ্রান্তিকর বলে আখ্যা দেন। তার ভাষায়, “কমিশন গঠনের জন্য তো সংবিধান পরিবর্তনের প্রয়োজন। যারা এমন প্রস্তাব দিচ্ছেন, তারা এটা জানেন না?” মান্নার মতে, এরকম অবাস্তব প্রস্তাবের মাধ্যমে চলমান আন্দোলনের প্রকৃত গতিধারা থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
সবশেষে মান্না বলেন, “আমাদের কোনো ব্যক্তিনির্ভর পক্ষ নেই, আমাদের একমাত্র পক্ষ জনগণ। জনগণই চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত নেবে কে নেতৃত্ব দেবে এবং কিভাবে।” তার এই বক্তব্যে স্পষ্ট—তিনি কোনো অস্পষ্ট বা ভিন্ন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ হতে রাজি নন, বরং প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার ও জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণই হতে হবে রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রধান ভিত্তি।