দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সম্প্রতি জুলাই শহীদ ও আহতদের পরিবারের জন্য নির্মিত আবাসন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রকল্পের বিভিন্ন ক্রয়ে বাজারমূল্যের কয়েকগুণ বেশি দাম দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম নিশ্চিত করেন যে, এই অভিযোগের পেক্ষিতে প্রধান কার্যালয় থেকে অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানকালে দুদক টিম গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তরে গিয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সব রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য গ্রহণ করে। সংগৃহীত এসব তথ্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
অভিযোগের সূত্রে জানা যায়, বিগত সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারকে মানসম্মত আবাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরিয়ে আনতে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ '৩৬ জুলাই' নামে এই প্রকল্প গ্রহণ করে। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নে যথাযথ নিয়ম-কানুন অনুসরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে।
বিশেষ করে, প্রকল্পে ৪৫ গুণ বেশি ব্যয়ে সীমানা প্রাচীর এবং চার গুণ বেশি ব্যয়ে বেড লিফট কেনার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও, সাবস্টেশন এবং পানির পাম্প কিনতেও পাঁচ গুণ বেশি ব্যয় হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ধরনের অতিরিক্ত ব্যয় প্রকল্পে দুর্নীতির সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
দুদকের এনফোর্সমেন্ট অভিযানের ফলে প্রকল্পের অনিয়ম এবং দুর্নীতি সম্পর্কে গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের দুর্নীতি সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং প্রকল্পের উদ্দেশ্য পূরণে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন একটি মানবিক উদ্যোগ হলেও দুর্নীতির কারণে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। এই প্রকল্পে যে ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ।
দুদক কর্মকর্তারা জানান, তদন্তের পর প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে যাতে ভবিষ্যতে সরকারি প্রকল্পগুলোতে দুর্নীতি রোধ করা যায়।