জুলাই মাসকে ‘গর্বের মাস’ আখ্যা দিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, “এই মাসেই ছাত্র-ছাত্রীরা জাতির জন্য সাহসিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। তারা শুধু একটি আন্দোলনই করেনি, বরং গোটা জাতিকে একত্রিত করে নিপীড়নের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি এনে দিয়েছে।”
তিনি বলেন, “এক সময় আমরা অধিকার ভুলে গিয়েছিলাম। নাগরিক হিসেবে যে সম্মান, সেই অধিকার, আমরা প্রজায় পরিণত হয়েছিলাম। কিন্তু ছাত্ররা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে আমাদের সেই অবস্থান থেকে টেনে তুলেছে। তাই শুধু কথা নয়, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এই মাসে শহীদদের স্মরণে আয়োজন হওয়া উচিত। পাশাপাশি আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো সকল নাগরিকের দায়িত্ব।”
সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার গকুলদাসের বাগ এলাকায় জামেয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আবরার বলেন, “রাষ্ট্র তার সাধ্যানুযায়ী কাজ করছে, কিন্তু বেসরকারি উদ্যোগও প্রয়োজন। শুধুমাত্র সরকার নয়, আমাদের প্রত্যেককেই এগিয়ে আসতে হবে। সম্ভাবনার দ্বার আজ উন্মুক্ত। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক, কর্মমুখী ও সময়োপযোগী করে তুলতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এখন সময় খুব কম। তাই আর দেরি নয়, কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করতে হবে। এই খাতেই নতুন বাংলাদেশের কারিগর তৈরি হবে। যারা আগামী প্রজন্মের নেতৃত্ব দেবে, তারা এখান থেকেই উঠে আসবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জামেয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার সভাপতি ও বিশিষ্ট শিল্পপতি মোঃ জামালউদ্দিন মিঞা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, শিক্ষক মার্জিয়া খাতুন, বন্দর থানার ওসি লিয়াকত আলী, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবদুল কাইয়ুম এবং স্থানীয় প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে শিক্ষা উপদেষ্টা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ করেন। পরে তিনি দুই হাফেজ ছাত্রকে পাগড়ি পরিয়ে দেন, আমিজউদ্দিন রোটারী এতিমখানার মাছের পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন এবং দুস্থ পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে সেলাই মেশিন বিতরণ করেন।
শিক্ষা উপদেষ্টার এই বক্তব্য ও কর্মসূচি উপস্থিত সবাইকে অনুপ্রাণিত করে। দেশপ্রেম, শিক্ষার আধুনিকায়ন এবং মানবিক দায়িত্ব পালনে একটি সমন্বিত বার্তা পৌঁছে দেয় এই আয়োজন।