বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন যে, সদ্য প্রকাশিত জুলাই ঘোষণা পত্রে আন্দোলনের মূল আকাঙ্ক্ষা ও দাবিগুলো সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়নি। তিনি মনে করেন, ঘোষণাপত্রটি আরও পরিপূর্ণ, গোছানো ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হলে এটি জুলাই আন্দোলনের চেতনাকে আরও শক্তিশালীভাবে ধারণ করত এবং জাতীয় পর্যায়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারত।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজশাহী কলেজ প্রশাসন ভবনের সামনে ২৪ সের জুলাই বিপ্লবের শহীদ রায়হান আলীর প্রথম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। জাহিদুল ইসলাম বলেন, “জুলাই আন্দোলনের নয় দফা দাবি ছিল আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। কিন্তু ঘোষণাপত্রে সেই নয় দফা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়নি। এতে গতি, প্রক্রিয়া ও কৌশলগুলো অনেকটাই অবহেলিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “জুলাই আন্দোলনের চেতনায় আমরা সবাই একমত, কিন্তু রাজনৈতিক বক্তব্যের ক্ষেত্রে বিভাজন তৈরি হয়। এই বিভাজন যদি দূর করা যায়, তাহলে আমরা একসঙ্গে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব, ইনশাল্লাহ।
জাহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ঘোষণাপত্রে দেশের রেমিটেন্স যোদ্ধাদের অবদান, সাংবাদিকদের ত্যাগ এবং অনলাইনে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের অবদান অন্তর্ভুক্ত হয়নি। “এই ছোট ছোট বিষয়গুলোও আমাদের সংগ্রামের অংশ, এগুলোও প্রতিফলিত হওয়া দরকার ছিল,” তিনি উল্লেখ করেন। তাঁর মতে, পূর্ণাঙ্গ ও সুনির্দিষ্ট ঘোষণাপত্র জুলাই আন্দোলনের ঐতিহাসিক গুরুত্বকে আরও সুসংহত করত।
সভায় সাংবাদিক হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, একজন সাংবাদিককে হত্যা করা অত্যন্ত মর্মান্তিক ও দুঃখজনক। আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা হোক। সত্য প্রকাশের কারণে যদি সাংবাদিকরা হত্যার শিকার হন, তবে তারা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।” তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই অপরাধীদের চিহ্নিত করে জাতির সামনে উপস্থাপন করা হোক, যাতে এ ধরনের নৃশংসতা আর না ঘটে।
অনুষ্ঠানে রাজশাহী মহানগরীর নায়েবে আমির ড. মাওলানা কেরামত আলী উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিবিরের কেন্দ্রীয় ফাউন্ডেশন সম্পাদক মো: আসাদুজ্জামান ও কেন্দ্রীয় মানবাধিকার সম্পাদক সিফাত আলম। এছাড়া ছাত্রশিবির রাজশাহী মহানগর সভাপতি শামীম উদ্দিন ও মহানগর সেক্রেটারি ইমরান নাজিরসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানটি আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘প্রত্যয় শিল্পীগোষ্ঠী’র পরিবেশনায়, যেখানে তারা রক্তে দ্রোহের গান পরিবেশন করে। উপস্থিত নেতৃবৃন্দ ও অংশগ্রহণকারীরা এই আয়োজনে শহীদ রায়হান আলীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্দোলনের চেতনা ধরে রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।