ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও বৈঠক করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতারা। সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রদূতের গুলশানস্থ বাসভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং সংস্কার পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়। এনসিপির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এনসিপির চারজন শীর্ষ নেতা এ বৈঠকে অংশ নেন—দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা এবং যুগ্ম সদস্যসচিব আলাউদ্দীন মোহাম্মদ। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন পলিটিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কাউন্সিলর এরিক গিলান, পলিটিক্যাল অফিসার জেমস স্টুয়ার্ট এবং পলিটিক্যাল স্পেশালিস্ট ফিরোজ আহমেদ।
এনসিপির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, বৈঠকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শক্তিশালী করা, নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামো, এবং জুলাই ঘোষণাপত্রের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা হয়। জুলাই মাসে এনসিপির পদযাত্রায় দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় জনগণের ব্যাপক সাড়া পাওয়া নিয়েও কথা হয়। নেতারা দাবি করেন, গণমানুষের অংশগ্রহণই প্রমাণ করে যে রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য এখনই সময়।
বৈঠকে এনসিপি প্রতিনিধিরা আগামী নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পর্যবেক্ষণকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। একইসঙ্গে রাজনৈতিক সহনশীলতা ও সংলাপের মাধ্যমে সংকট সমাধানের ওপর গুরুত্ব দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন এবং শান্তিপূর্ণ ও স্বচ্ছ নির্বাচনী পরিবেশ গঠনে সবপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন। বৈঠক শেষে দুই পক্ষের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় এবং ফটোসেশন অনুষ্ঠিত হয়।
এনসিপি নেতারা বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে জানান, এই আলোচনার মাধ্যমে শুধু রাজনৈতিক বিষয়ই নয়, বরং অর্থনৈতিক সংস্কার, মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং নাগরিক স্বাধীনতার বিষয়গুলোও গুরুত্ব পেয়েছে। তারা মনে করেন, আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ দেশের রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে।
এনসিপি বিশ্বাস করে, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনই দেশের জন্য স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের পথ সুগম করবে। দলটি আশা করছে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় একটি নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা হবে।