সত্যজিৎ দাস:
নিউইয়র্ক সিটি পুলিশের (NYPD) বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম রতন (৩৬) যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহ্যাটনে সংঘটিত ভয়াবহ গুলিবর্ষণের ঘটনায় দায়িত্ব পালনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়েছেন। স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে উচ্চ নিরাপত্তার একটি অফিস ভবনে এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে।
NYPD কমিশনার জেসিকা টিশ নিশ্চিত করেছেন, রতন দায়িত্বে ছিলেন যখন ৩৪৫ পার্ক অ্যাভিনিউ-এর একটি বহুতল ভবনে এক সশস্ত্র যুবক এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। ঘটনাস্থলে NYPD সদস্যসহ চারজন নিহত হন এবং পরে অস্ত্রধারী নিজেও আত্মহত্যা করে।
ঘটনাস্থলে ব্ল্যাকস্টোন গ্রুপ,ডয়েচে ব্যাংক,KPMG, এবং আয়ারল্যান্ড কনস্যুলেটের অফিস রয়েছে, ফলে ভবনটিতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল।
“অফিসার রতন কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন দিয়েছেন,তিনি একজন প্রকৃত বীর" বলেন কমিশনার টিশ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে।
আত্মঘাতী বন্দুকধারী যুবকের নাম শেন তামুরা (২৭),যার কাছে ছিল একটি M4 রাইফেল,একটি রিভলভার এবং অতিরিক্ত ম্যাগাজিন। পুলিশ তার কাছ থেকে নেভাদা রাজ্যের ড্রাইভিং লাইসেন্স উদ্ধার করেছে। তার উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনার বিষয়ে ফেডারেল ও রাজ্য সংস্থা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
দিদারুল ইসলাম রতনের বাড়ি বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ায়। ২০০৯ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। উচ্চশিক্ষা শেষে NYPD-তে যোগ দেন এবং ব্রঙ্কসের ৪৭তম প্রিসিন্টে কর্মরত ছিলেন।
তিন সন্তানের জনক রতন বসবাস করতেন ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার এলাকায়। তাঁর স্ত্রী বর্তমানে তৃতীয় সন্তানের গর্ভবতী। রতন ছিলেন অব. শিক্ষক আবদুর রব ও মিনারা বেগমের একমাত্র পুত্র। তাঁর দুই বোনও যুক্তরাষ্ট্রেই থাকেন।
বাংলাদেশে তাঁর আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসীরা শোকাহত। কুলাউড়ার সমাজকর্মী ও ক্রীড়া সংগঠক নাজমুল বারী সোহেল বলেন,"রতন আমাদের এলাকার গর্ব ছিল। সে ছিল সংগ্রামী এবং মানুষের বন্ধু।"
নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস NYPD কর্মকর্তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। বাংলাদেশের প্রবাসী সমাজ ও নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট থেকেও সমবেদনা জানানো হয়েছে।