ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ "বংবং" মার্কোস চলতি জুলাই মাসের শেষার্ধে যুক্তরাষ্ট্র সফর করতে যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ফিলিপাইনের কূটনৈতিক মহল বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এই সফরটি ওয়াশিংটন ও ম্যানিলার মধ্যকার সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করার পাশাপাশি বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা খাতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
ফিলিপাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, মার্কোস আগামী ২০ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকবেন। তিনি হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সফরের মূল এজেন্ডা থাকবে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, দক্ষিণ চীন সাগরের কৌশলগত নিরাপত্তা, এবং যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত ২০ শতাংশ আমদানি শুল্ক, যা বর্তমানে ফিলিপাইনের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
শুক্রবার ফিলিপাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, আমরা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে সফরের চূড়ান্ত সূচি নির্ধারণে কাজ করছি। এই সফরটি আমাদের সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আমরা আশাবাদী।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত হোসে ম্যানুয়েল রোমাউলদেজ জানান, প্রেসিডেন্ট মার্কোস এই সফরে মূলত প্রতিরক্ষা চুক্তি এবং দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে গভীর আলোচনায় অংশ নেবেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই মার্কোস প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। দুই দেশের মধ্যে ১৯৫১ সালের পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি এখন আরও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে, বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সাগর ঘিরে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে।
দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের আগ্রাসী ভূমিকার প্রতিবাদে ম্যানিলা ও ওয়াশিংটন একযোগে সামরিক মহড়া পরিচালনা করছে। মার্কিন প্রশাসন সতর্ক করে জানিয়েছে, ফিলিপিনো সেনা বা জাহাজের উপর যদি কোনো হামলা হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিরক্ষা দায়িত্ব পালন করবে।
বিশ্লেষকদের মতে, মার্কোসের এই সফর মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে রাজনৈতিক বোঝাপড়ার নতুন দিক উন্মোচন করবে এবং এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকেও শক্তিশালী করবে।
এটি ট্রাম্পের শাসনামলে মার্কোসের প্রথম সফর, যা ঘিরে উভয় দেশেই ব্যাপক কূটনৈতিক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।