close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

যুবদল কর্মীর গুলিতে জামায়াতের ২ কর্মী আহত

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
In Begumganj, Noakhali, two Jamaat workers were injured in a shooting incident by Jubo Dal members following a dispute during a football match. They are receiving treatment at a local hospital.

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ফুটবল খেলার বিরোধের জেরে যুবদলের গুলিতে দুই জামায়াত কর্মী আহত। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ফুটবল খেলা কেন্দ্রিক ছোট-বড় বিবাদে দুই জামায়াত কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার (১৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বেতুয়াবাগ গ্রামে ওয়াসেকের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন মো. সজীব হোসেন (২০) ও মো. তুষার (২১)। উভয়ই গোপালপুর ইউনিয়ন জামায়াত যুব বিভাগের সদস্য এবং একই এলাকার বাসিন্দা।

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিটন দেওয়ান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, “স্কুল ভবনের ছাদের ওপর উঠে খেলাটি ভালোভাবে দেখাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ঝগড়া হয়। অভিযোগ ছিল যে খেলায় জুনিয়র খেলোয়াড়রা সুযোগ পাচ্ছে না, বরং সিনিয়র খেলোয়াড়রা প্রাধান্য পাচ্ছে। স্থানীয় মুরুব্বিরা সন্ধ্যায় বৈঠক করে বিষয়টি মিটমাট করে দেন। কিন্তু বৈঠকের পরপরই দুইজন গুলিবিদ্ধ হন।”

স্থানীয়দের বর্ণনা অনুযায়ী, গত ১৫ আগস্ট বিকেলে গোপালপুর হাইস্কুল মাঠে মনির পাটোয়ারী স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট চলাকালীন জামায়াতের কর্মী রাসেল ও বিএনপির কর্মী মানিকের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একই দিন সন্ধ্যায় যুবদল কর্মী হাবিব ও ছাত্রদল কর্মী মহসিনের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী মহড়া দেয়। ককটেল বিস্ফোরণের মাধ্যমে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। পরবর্তী দিন শনিবার রাতেও অস্ত্র নিয়ে তারা জামায়াতের কর্মীদের ধরতে পুনরায় তল্লাশি চালায়।

বেগমগঞ্জ উপজেলা জামায়াত যুব বিভাগের সভাপতি জাকির হোসেন অভিযোগ করেছেন, “রোববার সন্ধ্যায় বিষয়টি সমাধানের জন্য স্থানীয়রা মধ্যস্থতা করতে বসলে যুবদল কর্মী হাবিব ও ছাত্রদল কর্মী মহসিনের নেতৃত্বে লেদু, সোহেল, ফয়সাল, আশরাফ, হাসেম, মেরাজ ও মানিক জামায়াত কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে হাবিব এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে। এতে আমাদের যুব বিভাগের দুই কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন।”

হাবিব ও মহসিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আজিম সুমন বলেন, “এ বিষয়ে আমার বিস্তারিত জানা নেই। তবে খোঁজ খবর নিয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।”

ওসি লিটন দেওয়ান আরও জানান, “যারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, একপক্ষ দাবি করছে তারা তাদের লোক। অপর পক্ষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারিনি। স্থানীয়রা বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে মিটমাট করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু গুলির ঘটনায় পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে।”

স্থানীয়রা বলছেন, এই ধরনের ঘটনা এলাকার সামাজিক পরিবেশের জন্য মারাত্মক প্রভাব ফেলে। সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন। তারা আশা করছেন, প্রশাসন দ্রুত ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত করে ব্যবস্থা নেবে, যাতে ভবিষ্যতে এমন সংঘর্ষ প্রতিহত করা যায়।

উপজেলার বিভিন্ন মহলে এই ঘটনার প্রভাব দেখা দিয়েছে। যুবক থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই উদ্বিগ্ন। ফুটবল খেলা সাধারণত শান্তিপূর্ণ বিনোদনের একটি মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু রাজনৈতিক ও দলীয় দ্বন্দ্ব খেলাধুলাকে সহিংসতায় পরিণত করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্থানীয় রাজনৈতিক উত্তেজনা ও দলীয় সংঘাত যখন সামাজিক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে, তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে যায়।

প্রশাসনের দায়িত্ব হল সাধারণ মানুষকে নিরাপদ রাখা এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা কমানো। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের সংঘর্ষ আরও ভয়াবহ আকার নিতে পারে। স্থানীয়রা আশা করছেন, পুলিশ ও প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে এবং সুষ্ঠু তদন্ত করবে।

নিশ্চিতভাবেই, বেগমগঞ্জের এই ঘটনা প্রমাণ করে যে স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক উত্তেজনা খেলাধুলার মতো সাধারণ কর্মকাণ্ডেও প্রভাব ফেলতে পারে। তাই স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, এবং সাধারণ জনগণকে একত্রিত হয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে হবে।

No comments found