যশোরে পারিবারিক কলহের ভয়াবহ পরিণতি—পাওনা টাকা নিয়ে ঝগড়ার জেরে বড় ভাইয়ের হাতে খুন হয়েছেন শারমিন বেগম (২৮)। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (পিবিআই) মাত্র ১০ ঘণ্টার মধ্যেই ঘাতক ভাই ও ভাবীকে গ্রেফতার করে, যা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
ঘটনাটি ঘটে ২৩ জুলাই ২০২৫, সকাল ১০টা ২০ মিনিটে। যশোর সদর উপজেলার সুজলপুর এলাকায় শারমিনের সঙ্গে তার ভাবী ছালমা বেগমের টাকার লেনদেন নিয়ে শুরু হয় তর্ক। সেই তর্ক মুহূর্তেই উত্তেজনায় রূপ নেয়। ঘটনার একপর্যায়ে শারমিনের বড় ভাই খোকন মোল্লা ক্ষিপ্ত হয়ে একটি হাসুয়া কাচি (চাপাতি) নিয়ে শারমিনের বাড়িতে গিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় শারমিনের স্বামী মোঃ শিমুল ইসলাম যশোর কোতোয়ালী মডেল থানায় ৩০২/৩৪ ধারায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-৭২, তারিখ: ২৪/০৭/২০২৫)।
খুনের খবর পেয়ে পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট দ্রুত ছায়া তদন্ত শুরু করে। পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ মোস্তফা কামালের দিকনির্দেশনায়, পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন (পিপিএম-সেবা) এর সার্বিক সহযোগিতায় তদন্তে নামে পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) শ্যামল কুমার দত্ত, এসআই (নিঃ) কমলেশ মন্ডল এবং তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা শাখা।
অবশেষে ২৪ জুলাই ২০২৫ তারিখ ভোর ২টা ৪৫ মিনিটে খুলনার রুপসা থানার মিল্কি দেয়াড়া গ্রাম থেকে ঘাতক ভাই মোঃ খোকন মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তার দেওয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে যশোর কোতোয়ালী থানার রাজারহাট এলাকা থেকে ছালমা বেগমকেও আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুইজনই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। মামলাটি এখন পিবিআই এর সিডিউলভুক্ত হওয়ায়, পিবিআই যশোর জেলা স্বউদ্যোগে তদন্তভার গ্রহণ করেছে। মামলাটি তদন্ত করছেন এসআই (নিঃ) কমলেশ মন্ডল।
পিবিআই সূত্রে জানানো হয়, আসামিদের যথাযথ প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হবে এবং হত্যাকাণ্ডের পেছনের মূল কারণ ও সংশ্লিষ্ট অন্য কেউ জড়িত কি না, তা বের করতে তদন্ত অব্যাহত থাকবে।