বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, জনগণের মতামত ছাড়াই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে দেশে পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতিতে নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি মনে করেন, জনগণের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার না করেই নতুন একটি ভোটপ্রক্রিয়া চাপিয়ে দেওয়া হলে তা গণতন্ত্রের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
বুধবার (২০ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত যৌথসভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “গণতন্ত্র প্রতিটি দেশে অনুশীলন হয়, তবে এর ধরন ভিন্ন। পিআরও একটি কনসেপ্ট, যা বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে বাস্তবায়ন হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত জনগণের কাছে এ বিষয়ে কোনো পরিষ্কার ধারণা দেওয়া হয়নি। অথচ জনগণের মতামত না নিয়েই এই পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।”
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, “যে দলগুলো পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দাবি করছে, তারা কি ব্যাখ্যা দিয়েছে কীভাবে এটি বাস্তবায়ন করা হবে? জনগণকে কি কখনো এ নিয়ে কিছু বলা হয়েছে? কোনো প্রচার বা আলোচনা কি হয়েছে? জনগণ তো এখনো কিছুই জানে না।”
নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, “আমরা এখনো বলছি না যে আমরা পিআরের পক্ষে বা বিপক্ষে। আসল প্রশ্ন হলো, জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া এমন একটি পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়া একেবারেই অনুচিত। যেকোনো নির্বাচনী ব্যবস্থাই জনগণের মতামত নিয়ে চালু করা উচিত।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “পিআর পদ্ধতি উন্নত বিশ্বে ব্যবহৃত হয়, তবে বাংলাদেশে এর প্রয়োগের আগে জনগণকে বিষয়টি বুঝতে হবে। কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বা রাজনৈতিক নেতা বসে সিদ্ধান্ত নিলেই চলবে না। জনগণের সঙ্গে আলোচনা না করে এবং তাদের মতামত না নিয়ে নতুন পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়া হলে তা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “যদি সরকার বা কিছু রাজনৈতিক দল মনে করে পিআর পদ্ধতি ভালো, তাহলে আগে জনগণের কাছে যান, তাদেরকে বুঝিয়ে বলুন এই পদ্ধতির সুবিধা-অসুবিধা কী। তারপর জনগণের মতামত নিন। জনগণের অনুমোদন ছাড়া কোনো পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়া গণতন্ত্রের মূল ভিত্তিকে দুর্বল করবে।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “বাংলাদেশের মানুষকে অজ্ঞ রেখে যেকোনো নতুন ভোটপদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়া হলে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে এবং সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই এখনই সময়, জনগণের কাছে বিষয়টি স্বচ্ছ করা, বিস্তারিত জানানো এবং তাদের মতামত নেওয়া।”