গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, নতুন বাংলাদেশে জনগণ বিএনপি-জামায়াত কাউকেই ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তিনি সতর্ক করে বলেন, ৪৮ শতাংশ ভোটার এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি এবং তরুণরাই দেশের ভবিষ্যৎ শক্তি।
নতুন বাংলাদেশে জনগণ বিএনপি-জামায়াত কাউকেই ক্ষমতায় দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে রাজশাহী নগরীর বাটার মোড়ে অনুষ্ঠিত এক গণসমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নুরুল হক নুর বলেন, ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ে প্রবেশ করলেও গত এক বছরে প্রত্যাশিত পরিবর্তন আসেনি। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখনও পুরনো ধাঁচের ফ্যাসিবাদী রাজনীতি সক্রিয় রয়েছে এবং এটি আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তিনি মনে করিয়ে দেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের শেকড় নিহিত ছিল ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলনে, যা ছিল তরুণ প্রজন্মের প্রতিবাদের অন্যতম বড় প্ল্যাটফর্ম।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের মূল শক্তিই ছিল ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলন। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতা থেকেই নতুন বাংলাদেশ গঠিত হয়েছে। তবে এই নতুন বাংলাদেশে জনগণ বিএনপি-জামায়াত কাউকেই ক্ষমতায় দেখতে চায় না। আগামীর সম্ভাবনাময় বাংলাদেশে তরুণরাই হবে প্রধান চালিকাশক্তি, আর তাদের হাতেই দেশের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।”
নুরুল হক নুর আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (PR) পদ্ধতির গুরুত্ব নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, “উচ্চকক্ষে যদি আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়, তাহলে প্রায় সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি থাকবে সংসদে। এতে একটি কার্যকর ও ভারসাম্যপূর্ণ পার্লামেন্ট গঠিত হবে। তাই আমরা দাবি জানাই, অন্তত উচ্চকক্ষে আগামী নির্বাচন থেকে পিআর পদ্ধতি চালু করতে হবে।”
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর উল্লেখ করেন, বর্তমানে প্রায় ৪৮ শতাংশ ভোটার এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি তারা কাকে ভোট দেবে। এই প্রেক্ষাপটে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সতর্ক করে বলেন, “দেশের মানুষ পরিবর্তনের পক্ষে। ১০টা মোটরসাইকেল, ২০ জন গুন্ডা দিয়ে ভয় দেখিয়ে বা প্রশাসনের সহায়তায় ভোটকেন্দ্র দখল করে কেউ আর এমপি, মন্ত্রী বা সরকার গঠন করতে পারবে না। সেই পুরনো দিনের রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি, এমনকি বায়তুল মোকাররমের খতিব—সবাই একযোগে পালিয়ে গেছেন। এই বাস্তবতা দেখেও যদি কেউ শিক্ষা না নেয়, তাহলে ভবিষ্যতে তাদের জন্য নির্মম পরিণতি অপেক্ষা করছে।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার ইকবাল বাদল। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দলের রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন কবির, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ শাজাহান আলী, কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, জেলা যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী রাজিব হোসেন, এবং জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সদস্য মো. মাসুম প্রমুখ।