জমে উঠছে দেশের অন্যতম বৃহৎ সাপাহার আম বাজার;দাম তুলনামূলক কম..

নাসির হায়দার avatar   
নাসির হায়দার
-:সাপাহার আম বাজারে :-১৭/০৬/২০২৫
হিমসাগর ১২শ -১৬শ,ল্যাংড়া ৮শ-১৫শ,নাক ফজলি ১২শ-১৬শ,ব্যানানা ম্যাংগো ২৮শ -৩৬শ,হাঁড়ি ভাংগা ১৫শ-২৫শ
এবং আম্রপালি ১৮শ-৩২শ..

নওগাঁর সাপাহার আম বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নির্ধারিত ৪০ কেজিতে ওজন নিয়ে বিতর্ক

নাসির হায়দার,সাপাহার,নওগাঁঃ

নওগাঁর সাপাহার আমের বাজারে ওজন এবং দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে মতভেদ দেখা দিয়েছে। সাপাহার আমের হাট বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ আম বাজার হিসেবে পরিচিত। এখানে প্রতিদিন প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসে আমের হাট, যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বেপারী, পাইকার এবং ব্যবসায়ীদের মুখর পদচারণা লক্ষ্য করা যায়। তবে এবছর বাজারে ওজন ও দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। রোববার (১৫ জুন) সাপাহার আমের হাট ঘুরে দেখা যায়, ভোর থেকে শুরু করে দিনব্যাপী চাষিরা ভ্যান, ভটভটি এবং অটোরিকশায় ক্যারেট সাজিয়ে বাজারে আম নিয়ে আসছেন। প্রশাসন থেকে কেজিতে আম ক্রয়ের নির্দেশনা থাকলেও এই নির্দেশনা সম্পূর্ণভাবে মানা হচ্ছে না। কোথাও ৫২ কেজিতে ১ মণ হিসেবে নেওয়া হচ্ছে আবার কোথাও ৫০ অথবা ৫১ কেজিতে। সাপাহার মাইপুর গ্রামের আমচাষি জালাল জানান, "অন্যের ৫ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আম্রপালি আমের বাগান করেছি। এবছর আমের দাম অনেক কম। গত বছর যে আম ৪২০০-৪৫০০ টাকায় বিক্রি করেছি, সে আম এ বছর ২০০০-২৫০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এই দামে আম বিক্রি করে কীটনাশক খরচ উঠবে না। লেবার খরচ তো বাদ দিলাম।" কানসাট থেকে আসা আম ব্যবসায়ী বাবু বলেন, "কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করেই ৫২ কেজি নেওয়া হয়। ক্যারেটের সকল আম এক সাইজের হয় না, যার কারণে ব্যবসায়ীরা কৃষকদের সঙ্গে পরামর্শ করে কারও কাছ থেকে ৪৮ আবার কারও কাছ থেকে ৫০ কেজি নিয়ে থাকে।" সাপাহার উপজেলা আম আড়ৎদার সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন রিফাত বলেন, "এ বছর তুলনামূলক ফলন কম হলেও আমের সাইজ অনেক ভালো হয়েছে। সারাদেশ থেকে ব্যবসায়ী এবং বেপারীরা ইতোমধ্যে আসতে শুরু করেছেন। আশা করা যাচ্ছে এ বছর ৫-৬ হাজার কোটি টাকার আম কেনাবেচা হবে।" তিনি আরও বলেন, "চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং কানসাটের ব্যবসায়ীরা ৫০ থেকে ৫২ কেজিতেই মণ হিসেবে আম ক্রয় করছেন। যার কারণে এ বাজারে আম ক্রয় করতে আসা অন্য ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়ছেন। তাই ওজনের বিষয়টি যদি সারাদেশে একই রকম রাখা হয়, তাহলে ব্যবসায়ীদের জন্য সুবিধা হয়।" জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় এ বছর ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে, যা থেকে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ২৩৪ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বাজারে আমের চাহিদা এবং ওজন নিয়ে সৃষ্টি হওয়া মতভেদ বাজার ব্যবস্থাপনায় একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই মতভেদের পাশাপাশি ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য বিভাগীয় বাজারে আমের চাহিদা কম থাকায় বাজার কিছুটা স্থবির অবস্থায় রয়েছে বলে দাবি করেছেন পাইকার, বেপারী এবং ব্যবসায়ীরা। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এই বছরের আমের বাজারের ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি কেমন হবে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মধ্যে একটি উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। তবে প্রশাসনের উদ্যোগ এবং ব্যবসায়ীদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় এই সমস্যা সমাধানের আশাবাদী সকলেই।ট্যাগস: আম বাজার, কৃষি, নওগাঁ, অর্থনীতি, ব্যবসা

کوئی تبصرہ نہیں ملا