জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যস্ত উপকূল: খুলনায় অভিযোজন ও প্রতিরোধের নতুন উদ্যোগ..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা avatar   
খুলনার কয়রায় জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ফোরামের অর্ধবার্ষিক সমন্বয় সভায় নেওয়া হলো গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার:

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, অকাল বৃষ্টি ও দীর্ঘস্থায়ী খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। এই জটিল জলবায়ু পরিস্থিতিতে স্থানীয় পর্যায়ে অভিযোজন ও প্রতিরোধমূলক উদ্যোগ জোরদার করার লক্ষ্যে খুলনার কয়রা উপজেলার সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের অর্ধবার্ষিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এই সভা অনুষ্ঠিত হয় গত বুধবার (২৩ জুলাই ২০২৫) সকাল ১১টায়। সভাটি আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স এবং সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি মোঃ খায়রুল আলম। সভায় উপস্থিত ছিলেন ফোরামের সম্পাদক মোঃ হুমায়ূন কবির, যুগ্ম সম্পাদক হারুন অর রশিদ, সদস্য চম্পাবতী তরফদারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সভায় জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত, স্থানীয় পর্যায়ে অভিযোজনের চ্যালেঞ্জ, এবং আগামী ছয় মাসের বাস্তবভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

সভায় সভাপতি মোঃ খায়রুল আলম তার বক্তব্যে বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক সংকট হলেও এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে উপকূলীয় জনপদে। আমাদের জনগণ প্রতিনিয়ত দুর্যোগের মুখোমুখি হচ্ছে, অথচ তারা এর জন্য দায়ী নয়। এই বৈষম্যমূলক পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।” তিনি আরও বলেন, “জলবায়ু ইস্যু এখন মানবিক ও সামাজিক ন্যায্যতার প্রশ্নে পরিণত হয়েছে। সরকারের পাশাপাশি নাগরিক সমাজকেও এ বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।”

সভায় গৃহীত কর্মপরিকল্পনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল—উপকূলীয় জনগণের মধ্যে জলবায়ু সচেতনতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা সহনশীল ফসল চাষে উৎসাহ প্রদান, দুর্যোগ প্রস্তুতি বৃদ্ধি, এবং সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে সমন্বয়ের মাধ্যমে অধিকার আদায়ের কৌশল গ্রহণ। ফোরামের সদস্যরা আশা প্রকাশ করেন যে, এই পরিকল্পনাগুলো শুধু ফোরামের কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং বাস্তবে উপকূলবাসীর জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এবং জলবায়ু ন্যায্যতার পথে বড় পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে।

এই সভা এবং এর মাধ্যমে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো স্থানীয় জনগণের জীবনে কতটা প্রভাব ফেলবে তা অবশ্য সময়ই বলবে। তবে ফোরামের সদস্যদের আশা, স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।

No se encontraron comentarios