ময়মনসিংহে এক বিশাল জনসভায় চরমোনাই পীর ফয়জুল করীম বলেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন রাজাকার প্রতিষ্ঠার রূপকার। ইসলামী দলগুলোকে সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এবার মানুষ ইসলামী শাসন দেখতে চায়।
ময়মনসিংহে চরমোনাই পীরের হুঁশিয়ারি: ‘এবার জনগণ ইসলামী শাসন দেখতে চায়
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ময়মনসিংহের ত্রিশালে এক বিশাল জনসভায় দেয়া বক্তব্যে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমান ছিলেন সেই ব্যক্তি যিনি এই দেশে রাজাকারদের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার শাসনামলে রাজাকারদের রাজনৈতিক শক্তি পুনরায় সংগঠিত হয়েছিল এবং তারা সরকারি দায়িত্বেও ছিলেন।
তিনি বলেন, "আজ যারা 'রাজাকার' বলে গালি দিচ্ছে, অতীতে তারা নিজেরাই সেই অপবাদ পেয়েছে। শেখ হাসিনা যখন ছাত্র-জনতাকে রাজাকার বলে গালি দিয়েছিলেন, তখন তাকেই দেশ ছাড়তে হয়েছিল। ভবিষ্যতেও যারা জনগণকে অবমূল্যায়ন করবে, তাদেরও জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে।"
চরমোনাই পীর আরও বলেন, "বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগে তার দলের নেতাকর্মীদের গণতন্ত্রের পাঠ পড়ান। যারা জনগণের কথা বোঝে না, তারা গণতন্ত্রের ভাষা বোঝে কীভাবে? তিনটি দলের শাসন আমরা দেখেছি। এবার এই জনগণ ইসলামী আদর্শের শাসন দেখতে চায়।
তিনি এ সময় স্পষ্ট ঘোষণা দেন, "আমরা যদি দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ি, তাহলে আর কখনো আমাদের ভোট দেবেন না। কিন্তু একবার আমাদেরকে সুযোগ দিন। আপনারা তো আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির শাসন দেখেছেন। এবার আমাদের দেখুন। আমরা আশ্বস্ত করছি—ঠকবেন না।
চরমোনাই পীর তার বক্তব্যে নির্বাচনী বার্তাও দেন। তিনি বলেন, “হক ও বাতিলের লড়াই শুরু হয়ে গেছে। সামনে নির্বাচনে ইসলামী দলগুলোর বিজয় নিশ্চিত করতে হবে।” তিনি দাবি করেন, দেশের মানুষ এখন চায় ইসলামভিত্তিক আদর্শিক রাজনীতি।
পরে তিনি ময়মনসিংহের ১১টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৯টি আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ঘোষণা করেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা শাখার সভাপতি মামুনুর রশীদ সিদ্দিকী। প্রধান বক্তার সঙ্গে আরও ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক গাজী আতাউর রহমান, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক নুরুল করীম আকরাম, স্বাস্থ্য পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন, ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির আসাদুজ্জামান সোহেল, কারী হাবীব উল্লাহ বেলালী, উত্তর শাখার সভাপতি হাদীউল ইসলাম, ত্রিশাল শাখার সভাপতি ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ, খেলাফত মজলিশের সভাপতি আবু তাহের এবং হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা শ্রী রাখাল।
ফয়জুল করীমের বক্তব্যে রাজনীতির যে স্পষ্ট সুর লক্ষ্য করা গেছে, তা আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইসলামী দলগুলোর তৎপরতা এবং প্রত্যাশার প্রতিফলন। রাজাকার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপিকে সরাসরি অভিযুক্ত করার মাধ্যমে তিনি একটি বার্তা দিয়েছেন—ইসলামী রাজনীতি শুধু ধর্ম নয়, বরং জনগণের কাঙ্ক্ষিত বিকল্প।