ঝালকাঠির রাজাপুরে একই সময় ও একই স্থানে বিএনপি এবং যুবদলের দুই গ্রুপের আলাদা সমাবেশ ডাকায় সম্ভাব্য সংঘাত এড়াতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ মার্কেট চত্বর ও আশপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
রাজাপুর, ঝালকাঠি — রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে সম্ভাব্য সংঘাত এড়াতে রাজাপুর উপজেলা প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাত ১০টা থেকে বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত ১২টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ মার্কেট চত্বর ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে সকল ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল ও রাজনৈতিক সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ স্বাক্ষরিত এই আদেশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৩ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত রাজাপুর উপজেলা পরিষদ মার্কেট চত্বর এবং সংলগ্ন এলাকায় কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনকে সভা, সমাবেশ, মিছিল বা মিটিং আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হবে না।
এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে বিএনপি ও যুবদলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা। জানা গেছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) রাজাপুর উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নুর হোসেন স্বাক্ষরিত এক পত্রে জানানো হয়— ১৩ আগস্ট বুধবার বিকেল ৩টায় উপজেলা পরিষদ মার্কেট চত্বরে এক র্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে, একই দিন ও সময়ে, একই স্থানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল রাজাপুর উপজেলা শাখার যুগ্ম-আহবায়ক মো. জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত অপর একটি পত্রে জানানো হয়, তারাও সমাবেশের আয়োজন করবে।
একই তারিখ, সময় ও স্থানে দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ঝুঁকি তৈরি করায় উপজেলা প্রশাসন দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে ১৪৪ ধারা কার্যকর করে। স্থানীয় সূত্র জানায়, অতীতে এ ধরনের পরিস্থিতি সহিংসতায় রূপ নেওয়ার উদাহরণ রয়েছে, যা এড়াতে প্রশাসনের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতোমধ্যে উপজেলা পরিষদ মার্কেট চত্বর ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। পুলিশ ও আনসার সদস্যরা এলাকাজুড়ে টহল দিচ্ছেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন।
স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে এই ঘটনার পর নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, দলের ভেতরের নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ও ক্ষমতার লড়াই মাঠ পর্যায়ে সংঘাতের জন্ম দিচ্ছে, যা শেষ পর্যন্ত জনজীবনে অস্থিরতা তৈরি করছে।
উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখাই তাদের মূল লক্ষ্য, এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে।