close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

যেসব কারণে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি এনসিপি

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
The National Citizens Party (NCP) refused to sign the 'July Charter,' demanding the full text and process for its implementation, including the referendum question and order, to ensure the C..

জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সই করা ‘জুলাই সনদ’কে ফাঁকা প্রতিশ্রুতি নয়, রাষ্ট্রের স্বৈরতান্ত্রিক ভিত্তি ভাঙার দলিল হিসেবে দেখতে চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তারা সনদে সই না করার কারণ হিসেবে গণভোটের প্রশ্ন ও আদেশসহ পূর্ণাঙ্গ প্রক্রিয়া প্রকাশের দাবি জানিয়েছে।

জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের আয়োজনে গত ১৭ অক্টোবর সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরিত হলেও, এতে সই করেনি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এই সনদকে কেবল ফাঁকা প্রতিশ্রুতি নয়, বরং দেশের স্বৈরতান্ত্রিক ভিত্তি ভেঙে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের একটি কার্যকর দলিল হিসেবে দেখার দাবি জানিয়েছে দলটি।

দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে এনসিপি'র অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এনসিপি মনে করে, এই সনদের সাংবিধানিক ভিত্তি নিশ্চিত করা আবশ্যক। এই নিশ্চয়তা ছাড়া সনদে সই করা অর্থহীন, কারণ এটি একটি গণতান্ত্রিক রূপান্তরের দলিল হতে ব্যর্থ হবে।

এনসিপি এই সনদে স্বাক্ষর না করার পেছনে তিনটি মূল শর্ত ও নিশ্চয়তা দাবি করেছে, যা তাদের কাছে সাংবিধানিক ভিত্তি নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য। এই শর্তগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা সনদে সই করতে প্রস্তুত নয়।

এনসিপি'র তিনটি মূল শর্ত নিম্নরূপ:

১. গণভোটের প্রশ্ন ও আদেশ প্রকাশ: এনসিপি-র প্রথম শর্ত হলো, গণভোটের প্রশ্ন এবং সেই সম্পর্কিত আদেশ আগেভাগেই প্রকাশ করতে হবে। তাদের মতে, প্রশ্ন ও প্রক্রিয়া প্রকাশ না হলে জনগণ কীসের পক্ষে বা বিপক্ষে মত দেবে, তা স্পষ্ট হবে না।

২. প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক আদেশ জারি: দ্বিতীয়ত, এনসিপি দাবি করেছে যে সনদের বাস্তবায়ন আদেশটি জারি করতে হবে প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুসকে। একজন নিরপেক্ষ ও সর্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির মাধ্যমে আদেশ জারি হলে তার বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে বলে তারা মনে করে।

৩. সংবিধান সংস্কার ও নতুন সংবিধান প্রণয়ন: তৃতীয়ত, গণভোটে যদি জনসমর্থন পাওয়া যায়, তবে নতুন সংসদকে সংবিধান সংস্কার করে 'বাংলাদেশ সংবিধান ২০২৬' প্রণয়ন করার ক্ষমতা দিতে হবে। এটি সনদের মাধ্যমে একটি স্থায়ী গণতান্ত্রিক সমাধান নিশ্চিত করবে বলে এনসিপি মনে করে।

এনসিপি'র নেতারা জোর দিয়ে বলেছেন, এই নিশ্চয়তাগুলো ছাড়া জুলাই সনদের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নেই। তারা স্পষ্ট জানিয়েছেন, আগে সনদের বাস্তবায়ন আদেশের পূর্ণাঙ্গ টেক্সট এবং প্রক্রিয়া প্রকাশ করতে হবে, তারপরই তারা সনদে স্বাক্ষর করার বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এনসিপি'র এই অবস্থান জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এবং এর লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এই দলটির দাবি প্রমাণ করে যে বৃহত্তর ঐক্যমতের স্বার্থে কেবল একটি সনদে স্বাক্ষর করাই যথেষ্ট নয়, বরং এর সাংবিধানিক ও আইনি প্রক্রিয়াকেও সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও নিশ্চিত করতে হবে। এনসিপি'র শর্তগুলো সনদের স্থায়িত্ব ও কার্যকারিতা নিয়ে অন্য দলগুলোর মধ্যে আলোচনা শুরু করতে পারে।


জাতীয় ঐক্যমত প্রক্রিয়াকে আরও দৃঢ় ও বিশ্বাসযোগ্য করতে হলে জুলাই সনদের বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াগত স্বচ্ছতা ও সাংবিধানিক ভিত্তি নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।

No comments found


News Card Generator