close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

জাতিসংঘে একই দিনে ভাষণ দেবেন ইউনূস-শেহবাজ-মোদি

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
At the 80th UN General Assembly, Bangladesh’s Chief Adviser Dr. Muhammad Yunus, India’s Prime Minister Narendra Modi, and Pakistan’s Prime Minister Shehbaz Sharif will address on the same day, drawing..

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে একই দিনে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। বিশ্ব কূটনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ার উত্তেজনা আবারো আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসবে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে একই দিনে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই খবর প্রকাশ করেছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন

আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে জাতিসংঘ সদর দফতরে অধিবেশন শুরু হবে। জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের প্রাথমিক সূচি অনুযায়ী, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের শীর্ষ নেতারা একই দিনে বক্তব্য রাখবেন। সকালে বক্তব্য দেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, আর বিকেলে বক্তব্য রাখবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের কৌশলগত সুযোগ তৈরি হবে।

গত মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চার দিনব্যাপী তীব্র উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়াকে পারমাণবিক সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনার মাত্র কয়েক মাস পরই দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী একই দিনে জাতিসংঘে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য গভীর আগ্রহের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এ সুযোগে ভারত সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার প্রসঙ্গ তুলবে, আর পাকিস্তান জবাবে কাশ্মির ও আঞ্চলিক শান্তির বিষয়টিকে সামনে আনবে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জানায়, শেহবাজ শরিফ জাতিসংঘ অধিবেশনে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। তার সঙ্গে থাকবেন উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার এবং প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক ফাতেমি। অপরদিকে, ভারতের পক্ষ থেকেও উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল নিউইয়র্কে যোগ দেবে। বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর। তবে মূল সাধারণ বিতর্ক চলবে ২৩ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রথা অনুযায়ী, প্রথম দিনে ব্রাজিল বক্তব্য রাখবে, এরপর যুক্তরাষ্ট্র। এ বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম ভাষণ দেবেন জাতিসংঘ মঞ্চে। এবারের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে— “একসাথে ভালো: শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের পথে ৮০ বছর ও আরও বেশি।”

প্রাথমিক তালিকা অনুযায়ী, ২৪ সেপ্টেম্বর জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। আর ২৬ সেপ্টেম্বর পারমাণবিক অস্ত্র বিলুপ্তির আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও রয়েছে। ফলে ওই দিনটিই হবে সবচেয়ে ব্যস্ত কূটনৈতিক দিন, যেখানে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ এশিয়ার তিন গুরুত্বপূর্ণ নেতা মঞ্চে বক্তব্য রাখবেন।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অধিবেশন হতে যাচ্ছে। কারণ, এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ, ইউক্রেন সংঘাত এবং দক্ষিণ এশিয়ার অস্থিরতা বিশ্ব নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করছে। পাকিস্তানের বার্তা পরিষ্কার— কাশ্মির সমস্যার ন্যায্য সমাধান ছাড়া আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। অন্যদিকে, ভারত বরাবরের মতো সন্ত্রাসবাদবিরোধী অবস্থান ও জাতীয় নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

একজন জ্যেষ্ঠ পাকিস্তানি কূটনীতিক মন্তব্য করেন, “বিশ্ব দেখেছে দক্ষিণ এশিয়া কত দ্রুত সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। কাশ্মির সমস্যার সমাধান ছাড়া জাতিসংঘের শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের প্রতিশ্রুতি আমাদের অঞ্চলে কখনো পূর্ণ হবে না।”

জাতিসংঘের এই অধিবেশনকে কেন্দ্র করে বৈশ্বিক নজর এখন দক্ষিণ এশিয়ার দিকে। মোদি-শেহবাজের পাশাপাশি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণ বাংলাদেশকেও বিশ্ব কূটনীতির আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে কূটনৈতিক মহলে জোরালো আলোচনা চলছে।

No comments found