রাজনীতির মাঠে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে জাতীয় পার্টি। কারণ, এবার দলটিকে সরাসরি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ‘সবচেয়ে বড় দোসর’ বলে আখ্যা দিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে একটি পোস্টে তিনি এই প্রতিক্রিয়া জানান, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে ওঠে।
সারজিসের বক্তব্যে কী আছে?
সারজিস আলম তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন,
“জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় দোসর। বিরোধী দলের যাবতীয় সুবিধা ভোগ করে আওয়ামী লীগকে সরকারি দলের বৈধতা দিয়েছিল এই জাতীয় পার্টি।”
তিনি আরও বলেন,
“প্রত্যেক ইলেকশনের আগে অবৈধ সরকারি দলের বিরোধিতার নামে ভন্ডামি করতো। তারপর নির্বাচনের ঠিক কয়েকদিন আগে জিএম কাদের ভারতে গিয়ে নেগোসিয়েশন করে ডামী বিরোধী দল সেজে বসে থাকতো।”
এ বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করেছেন যে, জাতীয় পার্টি একটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক নাটকের অংশ হিসেবে কাজ করে আসছে।
সরাসরি প্রশ্ন জিএম কাদেরকে ঘিরে
সারজিস প্রশ্ন রেখেছেন—
“সেই জিএম কাদের এখনো বাইরে কীভাবে? সরকারকে ধাক্কা না দিলে কি কাজ হয় না? নাকি প্রত্যেকটা কাজের জন্য ছাত্র-জনতাকে নতুন করে মাঠে নামতে হবে?”
তার এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। তিনি প্রশাসনের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশের পাশাপাশি জনগণের সক্রিয় ভূমিকাও প্রত্যাশা করছেন।
প্রেক্ষাপট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
জাতীয় পার্টি দীর্ঘদিন ধরে তথাকথিত বিরোধী দলের আসনে থাকলেও কার্যত তাদের ভূমিকা নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন মহল। সংসদে থাকা অবস্থায় তারা সরকারবিরোধী সুরে কথা বললেও কার্যত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সরকারের পাশেই দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ বহুবার উঠেছে।
সারজিস আলম সেই অভিযোগগুলোকে এবার সরাসরি রাজনৈতিক ভাষ্যে রূপ দিলেন। তার পোস্টে ‘ভারত সফর’, ‘নেগোশিয়েশন’ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহারে বোঝা যায়, তিনি রাজনৈতিক যোগসাজশ ও চুক্তিপত্র নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
জনগণের ভূমিকা নিয়ে ইঙ্গিত
সারজিসের পোস্টের শেষদিকে উঠে এসেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। তিনি ইঙ্গিত করেছেন,
সরকারকে জবাবদিহিতার মুখে আনতে হলে জনগণের — বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও তরুণদের — আবারও রাজপথে নামা জরুরি।
এই বক্তব্য ভবিষ্যৎ আন্দোলনের সম্ভাবনার ইঙ্গিত বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
-
জাতীয় পার্টি নিয়ে সারজিসের বিস্ফোরক মন্তব্য রাজনীতিতে আলোচনার ঝড় তুলেছে।
-
আওয়ামী লীগের ‘সহযোগী বিরোধী’ হিসেবে দলটির ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করছেন তিনি।
-
জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের কথাও জোর দিয়ে বলছেন এই এনসিপি নেতা।
এই ধরণের বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, তবে রাজনৈতিক মহলে ইতোমধ্যেই এই বক্তব্য নিয়ে তীব্র আলোচনা শুরু হয়ে গেছে।