জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস ২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ১২ জন সফল আত্মকর্মী ও ৪ জন যুব সংগঠককে জাতীয় যুব পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বিজয়ীদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, 'প্রযুক্তি নির্ভর যুবশক্তি, বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্বের অগ্রগতি' এই প্রতিপাদ্য নিয়ে উদ্যাপিত হচ্ছে এবারের যুব দিবস। সাম্য, নাগরিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধির নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তরুণ প্রজন্মের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তি হবে এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর মূল চালিকা শক্তি।
তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের সম্ভাবনা যাচাই এবং উন্নয়ন, ইন্টারনেট খরচ কমানো, আধুনিক আইসিটি অবকাঠামো নির্মাণ, স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম তৈরিসহ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি খাতে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে।
উপদেষ্টা জানান, ই-স্পোর্টসকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবং দেশের ই-স্পোর্টস খাতের বিকাশে প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো তৈরির কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে।
ইয়ুথ ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে আলোকপাত করে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৩ শতাংশই ৩৫ বছরের নিচে। এই তরুণ শক্তিই আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ ও শক্তি।' সরকার এই বাস্তবতা উপলব্ধি করে যুব উন্নয়নে প্রশিক্ষণ, ঋণ ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আরও বলেন, ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত ৬৪টি জেলা কার্যালয়, ৭০টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ৫০১টি উপজেলায় মোট ৮৩টি ট্রেডে প্রায় ৭৪ লাখ তরুণ-তরুণী প্রশিক্ষণ লাভ করেছে। বিভিন্ন ঋণ কর্মসূচির আওতায় এ পর্যন্ত প্রায় ১১ লাখ তরুণ ২৭০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সচিব মো. মাহবুব-উল-আলমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, শেখ মইনউদ্দিন এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. গাজী সাইফুজ্জামান।
উক্ত অনুষ্ঠানে যুব সমাজের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপনের প্রশিক্ষণ, ভ্রাম্যমাণ আইসিটি প্রশিক্ষণ, ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ প্রকল্প এবং যানবাহন চালনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রকল্প। এছাড়া ৯ লাখ যুবক ও যুব নারীকে দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে ইকোনমিক একসিলারেশন এন্ড রিসাইলেন্স ফর এনইইটি (ইএআরএন) প্রকল্পের কথাও তুলে ধরা হয়।
এছাড়াও, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জানান যে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও অটোমেশন বিষয়ক দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রশিক্ষণ ভিত্তিক আত্মকর্মসংস্থান প্রকল্প দ্রুত চালু হতে যাচ্ছে।
এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের যুব সমাজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে যুব সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে।