জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেছেন, জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে দেশে কোনো নির্বাচন কিংবা রাজনৈতিক সংস্কার টেকসই হবে না। তিনি সতর্ক করেন, জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা গণতন্ত্রের শত্রু।
জাতীয় পার্টির একাংশের মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা দিয়েছেন, জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন কিংবা রাজনৈতিক সংস্কার কখনোই টেকসই হবে না। তাঁর ভাষায়, জাতীয় পার্টিকে বাইরে রেখে যে সংলাপ হচ্ছে, তা নিছক ভ্রান্ত প্রচেষ্টা এবং এর কোনো কার্যকারিতা নেই।
শনিবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে জাতীয় শ্রমিক পার্টি আয়োজিত প্রতিনিধি সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন তিনি। সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “জাতীয় পার্টি ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। জাতীয় পার্টি ছাড়া কোনো সংস্কারও সম্ভব নয়। যারা জাতীয় পার্টিকে উপেক্ষা করে রাজনৈতিক সংলাপ করছে, তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। এ ধরনের সংলাপ দীর্ঘস্থায়ী হবে না।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, জাতীয় পার্টি দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থেকেও জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। “আজ প্রায় ৩৫ বছর আমরা ক্ষমতার বাইরে আছি। আওয়ামী লীগ বা বিএনপি—কোনো বড় দল এত দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে ছিল না। অথচ জাতীয় পার্টি এখনো শক্তিশালী একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে আছে। কারণ, আমাদের দলে পোড়খাওয়া, অভিজ্ঞ এবং ভোটের রাজনীতিতে পরীক্ষিত নেতারা আছেন। তাদের নেতৃত্বেই আমরা আগামী দিনে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ব,” যোগ করেন তিনি।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে, তারা শুধু জাতীয় পার্টির নয়—তারা দেশের শত্রু, গণতন্ত্রের শত্রু, সমাজের শত্রু এবং মানুষের শত্রু। আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর জবাব দেব।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় শ্রমিক পার্টির সভাপতি মেফতাহ উদ্দীন জসিম। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ইকবাল হোসেন তাপস, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. খলিলুর রহমান খলিলসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
নেতারা তাদের বক্তব্যে বলেন, জাতীয় পার্টি শুধু ইতিহাসের অংশ নয়, বরং ভবিষ্যৎ রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে। তারা দাবি করেন, জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক সংস্কৃতি, নেতৃত্ব ও ত্যাগ ভবিষ্যতে দেশকে নতুন দিকনির্দেশনা দেবে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে যখন নানা জোট এবং সংলাপ নিয়ে বিতর্ক চলছে, তখন জাতীয় পার্টির এই ঘোষণা রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জাতীয় পার্টি তার ঐতিহ্য ও দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার কারণে আগামী রাজনৈতিক সমীকরণে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন যে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে, সেখানে জাতীয় পার্টি কতটা শক্তিশালীভাবে নিজেদের অবস্থান প্রতিষ্ঠা করতে পারে—তা সময়ই বলে দেবে। তবে শামীম হায়দার পাটোয়ারীর বক্তব্য নিঃসন্দেহে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।