বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তিনি সতর্ক করে দেন, এ ধরনের শক্তির বিরুদ্ধে জনগণ রুখে দাঁড়াবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ দৃঢ় কণ্ঠে বলেছেন, দেশের নির্বাচন নিয়ে বারবার অজুহাত তুলে যারা সময়ক্ষেপণ ও প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে, তারা আসলে গণতন্ত্রের পক্ষে নয়, বরং গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিকে মদদ দিচ্ছে। তার মতে, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারবে না। কিন্তু নির্বাচনের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা দেশের জন্য এক বিপজ্জনক সংকেত তৈরি করছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যুবদলের আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সবার সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ জোর দিয়ে বলেন, "যারা নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে তারা গণতন্ত্রের শক্তি নয়। বরং তারা দেশে এক অচলাবস্থা তৈরি করতে চায়।"
তিনি আরও বলেন, বিএনপি সবসময় জনগণের ভোটাধিকারের পক্ষে। বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশনায় এবং তার আদর্শকে সামনে রেখে বিএনপি আলোচনার মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রতিটি শক্তি ও দলকে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তার মতে, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। যদি এবারও একটি বিতর্কিত নির্বাচন হয়, তবে দেশ আরও গভীর অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতার দিকে যাবে। তিনি বলেন, জনগণ এখন অনেক বেশি সচেতন। গণতন্ত্রের নামে ভাঁওতাবাজি আর মেনে নেবে না তারা। সালাহউদ্দিন আহমদ কঠোর সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, "যারা ভোট পিছিয়ে দিতে চায়, যারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে চায়, জনগণ তাদের কঠোরভাবে প্রতিহত করবে।"
সভায় উপস্থিত নেতারা একমত হয়ে বলেন, বাংলাদেশে এখন একটি সঠিক গণতান্ত্রিক নির্বাচনই সময়ের দাবি। জনগণের মতামতকে অগ্রাহ্য করে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলে তার ভয়াবহ পরিণতি হবে। তারা মনে করেন, জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র রক্ষায় বিএনপি শেষ পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সালাহউদ্দিন আহমদের এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিএনপি স্পষ্ট বার্তা দিল যে, তারা আর কোনো অজুহাত বা সময়ক্ষেপণ মেনে নেবে না। দেশের ভবিষ্যৎ যে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের উপর নির্ভর করছে, সেটিই তারা বারবার তুলে ধরছে।
জনগণ এখন তাকিয়ে আছে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি—তারা সত্যিই গণতন্ত্র রক্ষা করতে চায় নাকি কেবল ক্ষমতার লোভে অচলাবস্থা সৃষ্টি করতে চায়। আর বিএনপির পক্ষ থেকে স্পষ্ট ঘোষণা এসেছে, নির্বাচন বিলম্বের ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে জনগণের শক্তিই হবে সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ।