close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

জামায়াত নেতার গদিসহ ৭ গদি থেকে ভোলাগঞ্জের পাথর উদ্ধার

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
RAB has seized 40,000 cubic feet of stones from 7 warehouses, including one owned by a Jamaat leader in Dhaka’s Demra. The stones, worth crores, were illegally extracted from Bholaganj.

রাজধানীর ডেমরায় জামায়াত নেতার গদিসহ ৭ গদি থেকে ৪০ হাজার ঘনফুট ভোলাগঞ্জের পাথর উদ্ধার করেছে র‍্যাব। বাজারমূল্য কোটি টাকার এই পাথর অবৈধভাবে উত্তোলন করে ঢাকায় আনা হয়েছিল বলে জানা গেছে।

রাজধানীর ডেমরায় জামায়াতে ইসলামের এক নেতার মালিকানাধীন গদি থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ পাথর উদ্ধার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় র‍্যাব-১১ এর একটি বিশেষ দল এই অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে মোট সাতটি গদি থেকে আনুমানিক ৪০ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়। উদ্ধার হওয়া পাথরের সবই সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিখ্যাত ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

র‍্যাব জানায়, এই অবৈধ পাথর উত্তোলনের পেছনে রয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র, যারা ভোলাগঞ্জ এলাকা থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ পাথর ও বালু লুটপাট করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করছে। সাম্প্রতিক সময়ে শুধু ভোলাগঞ্জ থেকেই প্রায় দুই লাখ ঘনফুট সাদা পাথর লুট করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য আনুমানিক ২০০ থেকে ২৫০ কোটি টাকা। একই সময়ে প্রায় ছয় লক্ষ ঘনফুট বালু লুট হয়েছে, যার মূল্য প্রায় ২৪০ কোটি টাকা। এসব পাথর ও বালু প্রথমে স্থানীয় দয়ার বাজার, কলাবাড়ি এবং ভোলাগঞ্জের ১০ নম্বর ঘাটে জমা করা হয়। পরে বিভিন্ন ক্রাশার মেশিনে পাঠিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দীর্ঘদিন ধরেই ভোলাগঞ্জ অঞ্চলে অবৈধ পাথর উত্তোলন ও পাচার রোধে চেষ্টা চালিয়ে আসছে। সম্প্রতি প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো এবং সমন্বিত অভিযানের ফলে বেশ কিছু চক্রের কার্যক্রমে ধাক্কা লেগেছে। এরই ধারাবাহিকতায় র‍্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর যৌথভাবে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ডেমরার সারুলিয়া এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে পাওয়া যায় প্রায় ৪০ হাজার ঘনফুট আস্ত ও ক্রাশড পাথর, যার বাজারমূল্য কয়েক কোটি টাকা।

র‍্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “আমরা সাতটি প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল পরিমাণ পাথর জব্দ করেছি। এসব পাথরের একটি বড় অংশ ইতোমধ্যেই ক্রাশ করা হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, এসব পাথর অবৈধভাবে ভোলাগঞ্জ থেকে উত্তোলন করে ঢাকায় আনা হয়।” তিনি আরও জানান, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, ভোলাগঞ্জের প্রাকৃতিক পাথর ও বালুর মজুদ বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে উত্তোলন হওয়ায় এলাকাটির পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে। সেখানকার নদী ও পাহাড়ি অঞ্চলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, যা স্থানীয় জনগণের জীবন-জীবিকায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। পরিবেশবিদরা মনে করেন, অবৈধ উত্তোলন বন্ধ না হলে ভোলাগঞ্জের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সম্পদ ধ্বংস হয়ে যাবে।

এদিকে র‍্যাব ও প্রশাসনের এই অভিযানের ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ী মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এভাবে অভিযান চলতে থাকলে অবৈধ পাথর ব্যবসা অনেকাংশে কমে যাবে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

No comments found