close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

জামায়াত-এনসিপির শর্তের চাপে বিএনপি, নির্বাচন নিয়ে নতুন শঙ্কা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
With Jamaat and NCP imposing tough conditions, BNP faces mounting pressure as uncertainty looms over the February election.

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে জামায়াত ও এনসিপির কঠিন শর্তে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ বেড়েছে। বিএনপি চাপে, আর ভোটের অনিশ্চয়তা ঘনীভূত হচ্ছে।

ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণায় ভোটের তারিখ চূড়ান্ত হলেও, নতুন করে শর্ত ও দাবির মুখে পড়েছে বিএনপি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে—তাদের সংস্কার প্রস্তাব ও "জুলাই সনদ" বাস্তবায়ন ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না, এমনকি রাজপথে আন্দোলনেও নামতে পারে।

এই অবস্থায় নির্বাচনকে ঘিরে সন্দেহ, সংশয় ও অনিশ্চয়তা আরও গভীর হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতি কেবল বিএনপিকেই নয়, পুরো অন্তর্বর্তী সরকারকেই চাপে ফেলছে।

জামায়াত ও এনসিপি শুরু থেকেই নির্বাচনকে ঘিরে ভিন্ন অবস্থানে ছিল। বিএনপি দ্রুত ভোট চাইলেও, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শুরুতে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে ভোট আয়োজনের কথা বলেছিলেন। তবে জুনে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তার বৈঠক এবং যৌথ বিবৃতির পর ফেব্রুয়ারিতে ভোটের তারিখ ঘোষণা হয়।

এই যৌথ সিদ্ধান্তকে জামায়াত ও এনসিপি একপেশে ও পক্ষপাতমূলক বলে অভিযোগ করছে। তাদের দাবি, প্রধান উপদেষ্টার অবস্থান বিএনপির পক্ষে চলে গেছে, ফলে নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নষ্ট হচ্ছে।

দাবি ও শর্তাবলি

দল দুটি একযোগে বেশ কিছু দাবি তুলেছে—

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য আইনগত ভিত্তি তৈরি

  • নির্বাচনের আগে থেকেই সব দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা

  • সংসদে পিআর (Proportional Representation) ভোট পদ্ধতি চালু করা

  • আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার নিশ্চিত করা

জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, "অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংস্কারের সনদ আগে বাস্তবায়ন করতে হবে। যারা এতে বাধা দিচ্ছে, তারাই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।"

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের মতে, "সংস্কার ও বিচারের বিষয় পাশ কাটিয়ে শুধু নির্বাচন এগিয়ে নেওয়া মানুষের প্রত্যাশা ভঙ্গ করছে।"রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, জামায়াত ও এনসিপি নির্বাচনে অংশ না নিলে সেই ভোটের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক অঙ্গনে নিষ্ক্রিয় থাকায় বিএনপি বর্তমানে প্রভাবশালী অবস্থানে থাকলেও, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশ্ন উঠতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ মনে করেন, "জামায়াত ও এনসিপির অবস্থান বিএনপির ওপর চাপ সৃষ্টি করার কৌশল হতে পারে, যাতে আসন বণ্টন বা রাজনৈতিক ছাড় আদায় করা যায়।"

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এখনই নতুন করে আলোচনা শুরু করার সম্ভাবনা কম। সরকারের একজন উপদেষ্টা জানিয়েছেন, "নির্বাচনের সময় ঘোষণার পর আলোচনা করার দায়িত্ব এখন নির্বাচন কমিশনের।"

ইসি বলেছে, তারা দলগুলোর সঙ্গে পরিবেশ ও তফসিল নিয়ে আলোচনা করবে, তবে সংবিধান সংস্কারের মতো রাজনৈতিক ইস্যু সেখানে আলোচ্য নয়।

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে আপাতত সব দলের সম্মতি থাকলেও, জামায়াত ও এনসিপি তাদের শর্ত পূরণে অনড়। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচন পূর্ববর্তী আন্দোলন বা বয়কটের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে, ভোটের পরিবেশ অস্থিতিশীল হতে পারে।

বিশ্লেষকদের একাংশ বলছে, এই অনিশ্চয়তার সুযোগে আওয়ামী লীগও রাজনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালাতে পারে। এ কারণে, রাজনৈতিক ঐক্যের মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করাই এখন সময়ের দাবি।

No comments found