ঢাকা সফররত পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আগামীকাল বসুন্ধরায় জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমানের বাসায় গিয়ে সাক্ষাৎ করবেন।
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিনেটর ইসহাক দার ঢাকায় অবস্থান করছেন একটি সরকারি সফরে। তার এই সফরকে ঘিরে নানা কূটনৈতিক কার্যক্রমের পাশাপাশি একটি বিশেষ সাক্ষাতের খবর নিশ্চিত হয়েছে। জানা গেছে, তিনি আগামীকাল রোববার দুপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে দেখা করবেন। বর্তমানে হার্টে বাইপাস সার্জারির পর চিকিৎসকের পরামর্শে বিশ্রামে রয়েছেন ডা. শফিকুর রহমান। এই অবস্থায় তাকে কুশল জিজ্ঞাসা করতেই মূলত পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই সাক্ষাতে যাচ্ছেন বলে কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র বলছে, রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ভাড়া বাসায় অবস্থান করছেন জামায়াত আমীর। সেখানে গিয়েই ইসহাক দার সৌজন্য সাক্ষাত করবেন। এ সাক্ষাৎ শুধু ব্যক্তিগত খোঁজখবর নেওয়ার জন্য হলেও কূটনৈতিক অঙ্গনে এটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে। কারণ বাংলাদেশে জামায়াত একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল এবং পাকিস্তানের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে তাদের সম্পর্ক সবসময়ই আলোচিত। ফলে এই সফর শুধুমাত্র সৌজন্যমূলক না হয়ে ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
উল্লেখ্য, সিনেটর ইসহাক দার এর আগে একাধিকবার গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সফরে অংশ নিয়েছেন এবং দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক জোরদারে কাজ করছেন। ঢাকা সফরের দ্বিতীয় দিনে তার এই উদ্যোগকে অনেকে কূটনৈতিক বার্তা হিসেবেও দেখছেন। কারণ বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অঙ্গন অত্যন্ত অস্থির এবং বিভিন্ন দলের মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করেছে। এমন সময়ে পাকিস্তানের উচ্চপর্যায়ের একজন নেতার জামায়াত আমীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের নজরে আসবে।
অন্যদিকে, জামায়াতের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এই সাক্ষাৎ মূলত বন্ধুত্বপূর্ণ ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে। ডা. শফিকুর রহমান বর্তমানে বাইপাস সার্জারির পর আরোগ্য লাভ করছেন। তাই প্রতিবেশী মুসলিম দেশের একজন শীর্ষ নেতার তার খোঁজ নিতে আসা স্বাভাবিক বিষয়। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সাক্ষাৎ ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের নানা ইঙ্গিত বহন করতে পারে।
রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে, পাকিস্তান সবসময়ই বাংলাদেশে কিছু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। বিশেষ করে জামায়াতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তাই ইসহাক দারের এই সৌজন্য সাক্ষাৎ শুধুমাত্র মানবিকতা নয়, বরং রাজনৈতিক কূটনীতির অংশ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে আগামীকাল বসুন্ধরায় এই সাক্ষাৎ কেবল একটি সৌজন্য বিনিময় নয়, বরং বাংলাদেশের রাজনীতি ও কূটনীতির মাঠে নতুন আলোচনার জন্ম দেবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।