পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ঢাকায় জামায়াতে ইসলামী আমিরের বাসায় গিয়ে সাক্ষাৎ করেছেন। এ বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানারকম আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার ঝড় তুলেছে একটি সাম্প্রতিক বৈঠক। পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ঢাকায় এসে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমিরের বাসায় গিয়ে সাক্ষাৎ করেছেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নানা প্রশ্ন, সমালোচনা এবং জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে।
কূটনৈতিক প্রোটোকল মেনে এ ধরনের বৈঠক সাধারণত সরকারি পর্যায়ে হয়ে থাকে। কিন্তু একজন বিদেশি শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সরাসরি একটি দলের আমিরের বাসায় গিয়ে সাক্ষাৎ করায় বিষয়টি নিছক সৌজন্য সাক্ষাৎ নাকি এর ভেতরে রাজনৈতিক বার্তা লুকিয়ে আছে—তা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে বর্তমানে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও অস্থিরতা বিরাজ করছে। এ অবস্থায় পাকিস্তানের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধির সঙ্গে জামায়াত নেতার বৈঠক শুধু সৌজন্যমূলক ছিল না, বরং এটি ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সমীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। অনেকের মতে, পাকিস্তান চাইছে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক রাজনীতিতে জামায়াতকে আবারও সক্রিয় ভূমিকায় দেখতে।
অন্যদিকে সমালোচকরা এটিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন—একটি নিষিদ্ধপ্রায় দলের নেতার সঙ্গে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক কতটা কূটনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে? সরকারপক্ষের নেতারাও বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখছেন।
তবে জামায়াতের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। তারা কেবল এটুকু জানিয়েছে যে, বৈঠকটি ছিল সৌজন্যমূলক। অন্যদিকে পাকিস্তান দূতাবাসের একটি সূত্র জানিয়েছে, ইসহাক দার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আঞ্চলিক সম্পর্ক উন্নয়নের অংশ হিসেবে এ ধরনের বৈঠক করছেন।
এ বৈঠক ঘিরে যে তোলপাড় শুরু হয়েছে, তা থেকেই বোঝা যাচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি আজ কতটা সংবেদনশীল পর্যায়ে রয়েছে। সামান্য একটি কূটনৈতিক সাক্ষাৎও বড় ধরনের আলোচনায় পরিণত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ ঘটনা শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক অঙ্গনে প্রভাব ফেলতে পারে।
রাজনৈতিক মহল এখন এক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে—ইসহাক দার ও জামায়াত আমিরের এই বৈঠক কি সত্যিই কেবল সৌজন্যমূলক, নাকি এর মাধ্যমে ভবিষ্যতের রাজনৈতিক কোনো ইঙ্গিত দেওয়া হলো? সময়ই এর উত্তর দেবে। তবে আপাতত বলা যায়, এ বৈঠক বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে নতুন করে আলোচনায় এনে দিয়েছে।