কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আসছে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসার কথা রয়েছে পুতিনের। তবে ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও সামরিক কমান্ডারদের তথ্যে জানা গেছে, এই বৈঠককে পুতিন নিজের ব্যক্তিগত কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন, কিন্তু যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা অপরিবর্তিত রয়েছে।
জেলেনস্কি বলেন, “পুতিন নিশ্চিতভাবেই কোনো যুদ্ধবিরতি বা যুদ্ধের অবসানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন না। রাশিয়া যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য কোনো পরিকল্পনা নেয়নি। বরং তারা সেনা পুনর্বিন্যাস করছে, যা নতুন হামলার স্পষ্ট ইঙ্গিত।” তিনি আরও যোগ করেন, “যদি কেউ শান্তির জন্য প্রস্তুতি নেয়, তাহলে তারা যা করছে, তা করার কথা নয়।”
ইউক্রেনের দক্ষিণ সীমান্তের সামরিক মুখপাত্র ভ্লাদিস্লাভ ভলোশিন রয়টার্সকে জানিয়েছেন, রাশিয়া জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলে নতুন করে সেনা মোতায়েন করছে এবং কিছু ইউনিট স্থানান্তর করা হচ্ছে সম্ভাব্য আক্রমণের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন, যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ইউক্রেনকে কিছু ভূখণ্ড ছাড় দিতে হবে। তবে কিয়েভ এ প্রস্তাব সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, “রাশিয়া হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। তাই তাদের কোনো ছাড় দেওয়া উচিত নয়।”
এদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি যৌথভাবে জানিয়েছেন, ইউক্রেনের সম্মতি ছাড়া কোনো শান্তিচুক্তি চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। তাদের মতে, শান্তির প্রক্রিয়া অবশ্যই কিয়েভের শর্ত ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে হতে হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়ার পূর্ববর্তী কার্যক্রম প্রমাণ করেছে যে তারা শান্তি আলোচনার সময়ও সামরিক তৎপরতা চালিয়ে যেতে পারে। ২০২২ সালের প্রথম দিকের আলোচনার সময়ও একই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যখন ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ থামেনি বরং তীব্রতর হয়েছিল।
শান্তি আলোচনার প্রস্তুতির আড়ালে রাশিয়ার এই সামরিক তৎপরতা নতুন করে যুদ্ধের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। জেলেনস্কির সতর্কবার্তা ইঙ্গিত দিচ্ছে, কূটনৈতিক সমাধানের সুযোগ থাকলেও দ্রুত সংঘাত থামার সম্ভাবনা কম।