আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতালির উদ্ধারকর্মীরা এদিন ৬০ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছেন, যাদের মধ্যে ৫৬ জন পুরুষ এবং ৪ জন নারী। উদ্ধার হওয়া সবাইকে লাম্পেদুসায় আনা হয়েছে। ইতালির রেড ক্রস জানিয়েছে, বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের অধিকাংশের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও ৪ জনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর মুখপাত্র ফ্লাভিও দি জিয়াকোমো জানিয়েছেন, ডুবন্ত দুটি নৌকায় মোট ৯৫ জন যাত্রী ছিলেন। নৌকাগুলো লিবিয়া থেকে যাত্রা করেছিল। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, যাত্রার কিছুক্ষণ পর একটি নৌকায় পানি ঢুকতে শুরু করে। বিপদের মুখে অনেক যাত্রী অপর নৌকায় উঠে পড়েন। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে অতিরিক্ত ভারে সেটিও উল্টে যায়, ফলে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে।
উদ্ধারকারীরা সমুদ্রে তল্লাশি চালাচ্ছেন, তবে প্রতিকূল আবহাওয়া ও উত্তাল ঢেউ উদ্ধার কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সরকার অভিবাসন ঠেকাতে গত কয়েক বছরে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তি এবং সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা হয়েছে। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, শুধুমাত্র দমনমূলক পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়; অভিবাসন সমস্যার মূল কারণ—দারিদ্র্য, যুদ্ধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা—দূর না করলে এই ট্র্যাজেডি থামানো সম্ভব হবে না।
ইউএনএইচসিআর ও আইওএম উভয় সংস্থাই ভূমধ্যসাগরে অভিবাসী মৃত্যুর ধারাবাহিকতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা ইউরোপীয় দেশগুলোকে আরও কার্যকর উদ্ধার ও আশ্রয় নীতিমালা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
আইওএম মুখপাত্র জিয়াকোমো বলেন, “প্রতিটি মৃত্যু একটি ব্যর্থতা—মানবতার ব্যর্থতা, নীতির ব্যর্থতা। ভূমধ্যসাগরে মৃত্যুর মিছিল থামাতে আন্তর্জাতিক সমন্বয় জরুরি।”