ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে কারবালার যুদ্ধ করবে হিজবুল্লাহ: নাঈম কাসেম..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Hezbollah’s Deputy Chief Naim Qassem has warned that the group will never surrender its weapons as long as Israeli aggression continues. He declared that, if necessary, Hezbollah will wage a battle li..

লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর উপপ্রধান নাঈম কাসেম ঘোষণা করেছেন, ইসরাইলের আগ্রাসন চললে তারা কখনোই অস্ত্র সমর্পণ করবে না। প্রয়োজনে কারবালার যুদ্ধের মতো লড়াইয়ে নামবে হিজবুল্লাহ।

লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ আবারও ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। আরবাইনের বিশাল জনসমাবেশে হিজবুল্লাহর উপপ্রধান নাঈম কাসেম এক আবেগঘন বক্তৃতায় বলেন, ইসরাইলের অব্যাহত আগ্রাসন ও হামলার মুখে তাদের সংগঠন কোনোদিন অস্ত্র সমর্পণ করবে না। বরং প্রয়োজনে তারা কারবালার যুদ্ধের মতো ঐতিহাসিক সংগ্রামে নামবে।

তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমরা ইমাম হুসেন (আ.)-এর আদর্শে অনুপ্রাণিত। প্রতিটি মুহূর্তে মানুষকে ঠিক করতে হয় তারা ইমাম হুসেন (আ.)-এর সঙ্গে থাকবে, নাকি যুগের ইয়াজিদের সঙ্গে। আজ আমরা ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করছি, আর আমাদের প্রতিপক্ষ হলো যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলি আগ্রাসন।”

নাঈম কাসেম তার বক্তব্যে অতীতের লড়াইয়ের কথাও স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ২০০৬ সালের লেবানন যুদ্ধ ছিল আল্লাহর এক বিশেষ রহমত। তখন অগণিত শত্রু থাকা সত্ত্বেও হিজবুল্লাহ বিজয় অর্জন করেছিল। সেই বিজয় ইসরাইলকে টানা ১৭ বছর নিরুৎসাহিত করে রেখেছে। কাসেমের মতে, সেই সময়ের প্রতিরোধ আন্দোলন আজও লেবাননের জনগণকে সাহস জুগিয়ে চলেছে।

তিনি ইরানের ভূমিকাকেও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। কাসেম বলেন, “ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরান এখনো আমাদের পাশে রয়েছে এবং থাকবে। ঠিক যেমন প্রতিরোধের পতাকা সবসময় উঁচুতে থাকবে।” তার মতে, হিজবুল্লাহ কেবল একটি সংগঠন নয়; বরং লেবাননের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য অপরিহার্য শক্তি।

নাঈম কাসেম আরও জোর দিয়ে বলেন, হিজবুল্লাহর অস্তিত্ব ছাড়া লেবাননের স্বাধীনতা অসম্ভব। যারা প্রতিরোধ করে না, তাদের উদ্দেশ্যে তিনি প্রশ্ন তোলেন—“ইসরাইলি আগ্রাসন ও দখলদারিত্ব চলাকালে তোমরা কোথায় ছিলে?”

তিনি অভিযোগ করেন যে, বর্তমান লেবানন সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে। সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি বলেন, জনগণের প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র কেড়ে নেওয়া আসলে ইসরাইলি পরিকল্পনারই অংশ। কাসেম প্রশ্ন তোলেন, “সরকার কি নেতানিয়াহুকে খুশি করার জন্যই এসব করছে? দেশ রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব, শত্রুর হাতে হস্তান্তর করা নয়।”

হিজবুল্লাহ উপপ্রধানের মতে, সরকারের এ সিদ্ধান্ত দেশকে আরও বড় সংকটে ফেলবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ লেবাননের সহাবস্থান ভেঙে দেবে এবং দেশকে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের দিকে ঠেলে দেবে। এর দায়ভার সম্পূর্ণভাবে লেবানন সরকারের ওপরই বর্তাবে।

নাঈম কাসেম শেষ পর্যন্ত দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা দেন, “যতক্ষণ আগ্রাসন চলবে, ততক্ষণ ইসরাইল কখনো আমাদের অস্ত্র নামাতে বাধ্য করতে পারবে না। প্রয়োজনে আমরা কারবালার যুদ্ধ করব এবং আমরা বিশ্বাস করি, আল্লাহর সাহায্যে বিজয় আমাদেরই হবে। হয় লেবানন ঐক্যবদ্ধ থাকবে, নয়তো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে—কিন্তু এর দায়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে।”

তার এ বক্তব্য আরবাইন উপলক্ষে সমবেত জনতার মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ও আবেগ ছড়িয়ে দেয়। হিজবুল্লাহর সমর্থকরা মনে করছেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে এ বার্তাই তাদের নতুন প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রেরণা হয়ে উঠবে।

No comments found