যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা জবাব: ইয়েমেনে বিমান হামলায় ১৬ হাউছি সদস্যের মৃত্যু
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। মার্কিন সামরিক বাহিনী ইয়েমেনে হাউছি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ১৬ জন হাউছি সদস্য নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটি।
বুধবার (১৯ মার্চ) রাতে হাউছি-পরিচালিত বার্তাসংস্থা সাবা হতাহতের পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য নিশ্চিত করলেও হামলার সুনির্দিষ্ট সময় ও স্থান জানায়নি।
প্রেক্ষাপট
ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে সংঘাত চলাকালীন হাউছি গোষ্ঠী গাজায় ইসরাইলের অবরোধের প্রতিবাদে লোহিত সাগরে ইসরাইল-সংশ্লিষ্ট জাহাজে হামলার হুমকি দেয়। এর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন বাহিনী হাউছি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
এর আগে ইয়েমেনের রাজধানী সানাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় মার্কিন বিমান হামলায় সাত নারী ও দুই শিশু আহত হয়েছিল।
হামলার বিস্তারিত
হাউছি-পরিচালিত আল-মাসিরাহ টিভি জানিয়েছে, আল-জাওফ প্রদেশের সাদা, আল-হাজম জেলা ও আল-বায়দা প্রদেশের আস সাওয়াদিয়াহ এলাকায় বিমান হামলা চালানো হয়েছে। সূত্রমতে, একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে, যা বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটিগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঘোষণা
শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তিনি হাউছিদের বিরুদ্ধে বড় পরিসরে সামরিক অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশের পর থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ইয়েমেনে কয়েক ডজন মার্কিন বিমান হামলা রেকর্ড করা হয়েছে। হাউছি গোষ্ঠীর মতে, এই হামলায় মোট ৫৩ জন নিহত এবং ১০৭ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে।
লোহিত সাগরে উত্তেজনা
হাউছি গোষ্ঠী ২০২৩ সালের শেষের দিক থেকে লোহিত ও আরব সাগর, বাব আল-মান্দাব প্রণালী ও আদেন উপসাগর দিয়ে চলাচলকারী ইসরাইল-সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে। তাদের দাবি, গাজার জনগণের প্রতি সংহতি জানাতেই তারা এই আক্রমণ চালাচ্ছে এবং বিশ্ব বাণিজ্যকে ব্যাহত করার উদ্দেশ্য তাদের নেই।
পরবর্তী পদক্ষেপ
জানুয়ারিতে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর হাউছি গোষ্ঠী তাদের হামলা বন্ধ করেছিল। তবে ২ মার্চ গাজায় মানবিক সাহায্য বন্ধ করে দেওয়ায় তারা আবার হামলা চালানোর হুমকি দেয়। এই পরিস্থিতিতে ইয়েমেন ও লোহিত সাগরের উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা আরও গভীর হতে পারে এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে।