close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

হত্যা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ডে তৌহিদ আফ্রিদি

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Touhid Afridi, Managing Director of MyTV and content creator, has been arrested by CID in connection with the Jatrabari murder case. A Dhaka court has granted five days of police remand for interrogat..

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যাত্রাবাড়ী থানার আসাদুল হক বাবু হত্যা মামলায় কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও মাই টিভির এমডি তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। আদালত শুনানি শেষে তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন।

ঢাকার আলোচিত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ী থানায় সংঘটিত আসাদুল হক বাবু হত্যা মামলায় আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও বেসরকারি টেলিভিশন মাই টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তৌহিদ আফ্রিদি এখন আলোচনার কেন্দ্রে। সোমবার দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করার পর দীর্ঘ শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিন দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে সিআইডি তৌহিদ আফ্রিদিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে আসে। শুনানির আগে তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক খান মো. এরফান তার বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষও সর্বোচ্চ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে যুক্তি তুলে ধরে। তবে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিনের আবেদন জানান। উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে রোববার রাতে বরিশালে বিশেষ অভিযান চালিয়ে সিআইডি তাকে গ্রেপ্তার করে। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান গণমাধ্যমকে জানান, ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থেকে যাত্রাবাড়ী থানার ওই হত্যা মামলায় তৌহিদ আফ্রিদিকে ১১ নম্বর আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আন্দোলনের সময় সহিংসতায় তার সম্পৃক্ততা নিয়ে আমাদের হাতে প্রাথমিক তথ্য আছে। তদন্তে বিষয়গুলো আরও স্পষ্ট হবে।”

এই হত্যা মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম রয়েছে। ২ নম্বর আসামি সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং ৩ নম্বরে সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন। মামলায় আরও ২৫ জনকে নামীয় আসামি করা হয়েছে, পাশাপাশি অজ্ঞাত আরও অন্তত ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

একই মামলায় ২২ নম্বর আসামি হিসেবে তৌহিদ আফ্রিদির বাবা, মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গত ১৭ আগস্ট গ্রেপ্তার করে। বাবার পর এবার ছেলেও গ্রেপ্তার হওয়ায় এই মামলাকে ঘিরে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, যাত্রাবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সহিংসতায় প্রাণ হারান আসাদুল হক বাবু। তার পরিবার অভিযোগ করে, পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে বাবুকে হত্যা করা হয়। রাজনৈতিক অঙ্গনের আলোচিত কয়েকজন ব্যক্তিসহ টেলিভিশন শিল্পের প্রভাবশালী ব্যক্তিদেরও এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।

তৌহিদ আফ্রিদি বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় ইউটিউবার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তবে বাবার টেলিভিশন প্রতিষ্ঠানের এমডি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর তার নাম আরও আলোচনায় আসে। গ্রেপ্তারের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তৌহিদ আফ্রিদিকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনার ঝড় উঠেছে। কেউ কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযোগকে “গভীর ষড়যন্ত্র” হিসেবে দেখছেন, আবার অনেকেই বলছেন, “বড় প্রভাবশালী মহলকে বাঁচাতে এবার তার মতো তরুণদেরও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।”

রিমান্ডের সময় তাকে সিআইডি অফিসে নিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। তারা মনে করছেন, তৌহিদ আফ্রিদির কাছ থেকে পাওয়া তথ্য মামলার অন্যান্য আসামিদের ভূমিকা উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

আদালতে রিমান্ড শুনানির সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা জানান, তৌহিদ আফ্রিদিকে বেশ স্থিরভাবেই দেখা গেছে। তিনি আইনজীবীদের সঙ্গে সংক্ষিপ্তভাবে পরামর্শ করেছেন। তার আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা। তবে রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, “প্রমাণ ছাড়া কাউকে আসামি করা হয়নি।”

বর্তমানে এ মামলা নিয়ে দেশজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত এ বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করছেন। অনেকে মনে করছেন, এ মামলার রায় ভবিষ্যতের রাজনীতির গতি-প্রকৃতিকে সরাসরি প্রভাবিত করতে পারে।

No comments found